যশোরের মনিরামপুর ও বাঘারপাড়ায় তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় ৩১ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদের মধ্যে মনিরামপুরের ১২টি ইউপিতে ১৭ জন এবং বাঘারপাড়ার ৮টি ইউপিতে ১৪ জন স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কার হওয়া নেতাদের মধ্যে আছেন মনিরামপুরের রোহিতা ইউপির প্রার্থী উপজেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি আবু আনছার সরদার, কাশিপুর ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি আশরাফুল আলম মিন্টু, ভোজগাতী ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মোড়ল ও সদস্য আব্দুর রাজ্জাক এবং ঢাকুরিয়া ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আয়ুব হোসেন।
বহিষ্কার অন্য নেতারা হলেন উপজেলার হরিদাসকাটি ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির লিটন, খেদাপাড়া ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল হক, ঝাঁপা খেদাপাড়া ইউপির প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সদস্য স ম আলাউদ্দিন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুল ইসলাম।
এদিকে মনিরামপুরের চালুহাটী ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল হামিদ সরদার, খানপুর ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, দুর্বাডাঙ্গা ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ পারভেজ ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আতাউর রহমান লাভলু, কুলটিয়া ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আদিত্য মণ্ডল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য প্রভাষ ঘোষ, নেহালপুল ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আনিচুর রহমান ও সদস্য মনোয়ার হোসেনকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।
বাঘারপাড়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে জোহরপুর ইউপির প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মোল্লা বদর উদ্দীন ও উপজেলা সৈনিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, বন্দবিলা ইউপির প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক জিয়াউর রহমান জয়, রায়পুর ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মনজুর রশিদ স্বপন এবং সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোশারেফ হোসেন।
বহিষ্কার হয়েছেন একই উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউপির প্রার্থী উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আবু তাহের আবুল সরদার, ধলগ্রাম ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আতিয়ার রহমান, দোহাকুলা ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুণ অধিকারী, দরাজহাট ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়ুব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বাসুয়াড়ী ইউপির প্রার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সাঈদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘জনগণের ভালোবাসায় আমাদের দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রয়েছে। যার ফলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংখ্যা বেড়েছে। একই সঙ্গে বিএনপি ভোটে না থাকার কারণে দলে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব বিদ্রোহী প্রার্থীকে নিবৃত্ত করতে আমরা সাংগাঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’তিনি আরও বলেন, ‘শুধু দলীয় মনোনয়ন না, দলীয় শৃঙ্খলার বাইরে যেই অবস্থান নেবেন, তাকে বহিষ্কার করা হবে। ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা পাস করলেও তাদের দলে কখনও ফেরত নেয়া হবে না। একই সঙ্গে যারা দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেয়া হবে।’
আগামী ২৮ নভেম্বর যশোরের মনিরামপুর, বাঘারপাড়া ও শার্শার ৩৬টি ইউপি নির্বাচনে ভোট হবে। এর মধ্যে ২০টিতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা।
এর আগে গত ১১ নভেম্বরের ইউপি নির্বাচনে ঝিকরগাছা, চৌগাছা ও শার্শায় ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ৩৭ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার করে জেলা আওয়ামী লীগ।