অধিক সংখ্যক গ্রাহককে বিমার আওতায় আনার লক্ষ্যে গার্ডিয়ান লাইফ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একটি নতুন বীমা পরিকল্প ‘আজীবন পেনশন’ প্ল্যান চালু করেছে। এই পেনশন প্ল্যানের আওতায় পলিসি হোল্ডারের মৃত্যুতে মনোনীত নমিনি আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন।
মঙ্গলবার ‘আজীবন পেনশন প্ল্যান’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে গার্ডিয়ান লাইফের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত সিইও শেখ রকিবুল করিম।
এ সময় গার্ডিয়ান লাইফের হেড অফ রিটেইল বিজনেস মাহমুদুর রহমান খান, হেড অফ ইন্টারনাল অডিট অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স তাহসিনুর রহিম, চিফ অপারেটিং অফিসার শামীম আহমেদ, হেড অফ ব্যাংকাসুরেন্স আহমেদ ইশতিয়াক মাহমুদ, হেড অফ মার্কেটিং অ্যান্ড কম্যুনিকেশন রুবায়েত সালেহীন, হেড অফ একচুয়ারি শামীমা আফরোজ এবং হেড অফ হিউম্যান রিসোর্সেস হাবিব হাসান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজীবন পেনশন প্ল্যান একটি ‘কমপ্লিট রিটায়ারমেন্ট সল্যুশন’ যা শুধুমাত্র গ্রাহককেই নয়, গ্রাহকের অনুপস্থিতিতে বাকি জীবনের জন্য তার প্রিয়জনকেও সুরক্ষিত রাখবে। এই পেনশন প্ল্যানের পলিসি হোল্ডাররা মেয়াদপূর্তিতে আজীবন পেনশন পাবেন। পলিসি হোল্ডারের মৃত্যুতে মনোনীত নমিনি আজীবন পেনশন সুবিধার জন্য বিবেচিত হবেন।
শুধু আজীবন পেনশনই নয়, এই প্ল্যান গ্রাহকদের দেবে অবসরে সম্পূর্ণ আর্থিক স্বাধীনতা: গ্রাহক চাইলেই পলিসির মেয়াদ পূর্তিতে সম্পূর্ণ ম্যাচিউরিটি ভ্যালু (বিমা অংক + বোনাস) উঠিয়ে নিতে পারবেন অথবা গার্ডিয়ান লাইফের আজীবন পেনশন ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
ন্যূনতম ১ লাখ টাকার কাভারেজ থেকে শুরু হওয়া এই প্ল্যানটিতে গ্রাহকরা গার্ডিয়ান লাইফের অন্যান্য রাইডার সুবিধাগুলোও গ্রহণ করতে পারবেন। এগুলো হলো: স্বাস্থ্য বিমা, গুরুব্যাধি, স্থায়ী অক্ষমতা, দুর্ঘটনাজনিত সুবিধা (পিডিএবি) এবং দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ এবং দুর্ঘটনাজনিত বিমা (ডিআইএবি)।
গার্ডিয়ান লাইফের পেনশন প্ল্যানের মধ্যে আছে আজীবন পেনশন প্ল্যান ও নিশ্চিত পেনশন প্ল্যান।
আজীবন পেনশন প্ল্যান
এ পরিকল্পে বিমাগ্রহিতার অবসরকালীন (অর্থাৎ মেয়াদপূর্তির সাথে সাথে) সময় থেকে আজীবন পেনশন দেয়া হবে।
৫৫ অথবা ৬০ বছরের মধ্যে বিমাগ্রহিতা যে কোনো একটি পেনশন প্রাপ্তির বয়স নির্ধারণ করতে পারবেন। বিমা চলাকালীন বিমাগ্রহিতার মৃত্যু হলে নমিনি তার অর্জিত বোনাসসহ মূল বিমা অঙ্ক পাবেন।
প্রদত্ত প্রিমিয়ামের উপর আয়কর রেয়াত পাওয়া যায় এবং বিমা দাবির টাকাও আয়করমুক্ত।
কমপক্ষে দুই বছর বিমা চালু রাখার পর বিমা গ্রাহক স্বেচ্ছায় সমর্পণ মূল্য গ্রহণ করতে পারবেন অথবা তার উপর ভিত্তি করে ঋণ সুবিধাও নিতে পারবেন। মেয়াদপূর্তিতে বিমাগ্রহিতা চাইলেই মেয়াদপূর্তির বোনাসসহ মুল বিমা অঙ্ক নিতে পারবেন।
বিমাগ্রহিতা চাইলে তার অর্জিত বোনাসসহ মূল বিমা অঙ্ক (সম্পূর্ণ কিংবা আংশিক) গার্ডিয়ানের পেনশন ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে গ্রাহক আমৃত্যু পেনশন পেতে থাকবেন এবং গ্রাহকের মৃত্যুতে তার স্বামী বা স্ত্রী আজীবন পেনশন পেতে থাকবেন। অথবা গ্রাহক আমৃত্যু পেনশন পাবেন এবং পেনশন গ্রহিতার মৃত্যুতে বিনিয়োগকৃত অর্থ তার নমিনিকে দেয়া হবে।
পেনশন পলিসির শর্ত
বিমাগ্রহিতার বয়সসীমা হতে হবে ১৮ থেকে ৫৫ বছর।
বার্ষিক, ষান্মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রিমিয়াম প্রদান করা হবে।
এই পরিকল্পের সঙ্গে সহযোগী বিমা হিসেবে গুরুব্যাধি বিমা, স্বাস্থ্য বিমা, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বিমা এবং স্থায়ী অক্ষমতা ও দুর্ঘটনাজনিত বিমা সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।
বিমা পলিসির মেয়াদ সর্বনিম্ন পাঁচ বছর। প্রিমিয়াম পরিশোধের মেয়াদ হবে পলিসি মেয়াদ।
উত্তরাধিকার পরিকল্পনা
পেনশন চলাকালীন কোনো অনিশ্চিত ঘটনায় বিমাগ্রহিতা বা নমিনি দুই জনেরই মৃত্যু হলে বিনিয়োগকৃত অর্থের বাকি অংশ প্রচলিত আইন অনুসারে আইনি সুবিধাভোগীকে ফেরত দেয়া হবে।
নিশ্চিত পেনশন প্ল্যান
পেনশন প্ল্যানের প্রিমিয়াম নির্ধারণের জন্য গুগল প্লে স্টোর থেকে মাই গার্ডিয়ান অ্যাপ ডাউনলোড করে জন্ম তারিখ, পেনশন গ্রহণের (অবসরকালীন) বয়স (৫০ থেকে ৬০ বছরের যে কোনো একটি বয়স), কাঙ্ক্ষিত মাসিক পেনশনের পরিমাণ দিতে হবে।
এই পরিকল্পে বিমাগ্রহিতার অবসরকালীন (অর্থাৎ মেয়াদপূর্তির সাথে সাথে) সময় থেকে আজীবন পেনশন প্রদান করা হবে।
পেনশন শুরু হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে বিমাগ্রহিতার মৃত্যু হলে অবশিষ্ট গ্যারান্টেড সময়ে পেনশন পাবেন তার নমিনি।
পেনশন আরম্ভ হওয়ার পূর্বে বিমাগ্রহিতার মৃত্যু হলে নমিনিকে সর্বোচ্চ বার্ষিক পেনশনের ১০ গুণ টাকা প্রদান করা হবে।
প্রদত্ত প্রিমিয়ামের উপর আয়কর রেয়াত পাওয়া যায় এবং বিমা দাবির টাকাও আয়কর মুক্ত।
শর্তাবলি
বিমাগ্রহিতার বয়স সর্বনিম্ন ২০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ বছর হতে হবে।
প্রিমিয়াম বার্ষিক ভিত্তিতে প্রদেয়। তবে ষান্মাসিক, ত্রৈমাসিক ও মাসিক ভিত্তিতেও প্রিমিয়াম প্রদান করা যায়।
সহযোগী বিমা হিসাবে গুরুব্যাধি এবং স্বাস্থ্য বিমা সুবিধা গ্রহণ করা যায় । বিমাগ্রহিতা যে কোনো সময় পেনশনের পরিমাণ বৃদ্ধি বা হ্রাস করতে পারবেন।