বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আসল সংগ্রামের ঘোষণা রেজা কিবরিয়ার

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২১ ২০:৩৭

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর বলেন, ‘আর সংঘাত বাড়াবেন না। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনুন।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে আসল সংগ্রামে নামার ঘোষণা দিয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে নিয়ে গঠন করা গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণ অধিকার পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এই ঘোষণা দেন।

রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমাদের আজকের সমাবেশে অনেক মুক্তিযোদ্ধা এসেছেন। আমাদের দেশের মুক্তি এবং স্বাধীনার জন্য সামনে একটি যুদ্ধ হবে। আশা করছি, আপনারা সবাই সেই সংগ্রামে অংশ নেবেন। পঞ্চাশ বছরেও আমরা আসল স্বাধীনতা পাইনি। এবারের সংগ্রামটিই আসল সংগ্রাম।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গ্রামে গ্রামে আপনারা তৈরি থাকেন। সামনে আমরা বড় সংগ্রামে নামছি। এই সংগ্রামটি দীর্ঘদিনের হবে৷ আওয়ামী লীগ এটি ঠেকাতে চেষ্টা করবে। তারা পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীকে অপব্যবহার করছে। তবে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী একদিন তাদের ভুল বুঝতে পারবে।’

আওয়ামী লীগ ঘৃণিত দলে পরিণত হয়েছে দাবি করে এই নেতা বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগের জন্য আমার বাবা জীবন দিয়েছেন। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি গণ-অধিকারের দল ছিল। তারপর দলটি পথ হারিয়ে ফেলেছে।’

দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলেও দাবি করেন রেজা কিবরিয়া।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের উদ্দেশে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর বলেন, ‘আর সংঘাত বাড়াবেন না। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আপনার বাপ, দাদা, মামা-খালুর সম্পত্তি না। এটা জনগণের দাবি। যতই অজুহাত দেখান, জনগণ যদি রাস্তায় নামে তাহলে আপনারা অবশ্যই দিতে বাধ্য হবেন।’

তিন দফা দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। দাবিগুলো হলো, তেল-গ্যাসের বর্ধিত দাম ও গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য মাসিক ভিত্তিতে স্বল্প মূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।

নুর বলেন, ‘এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এটি সরকার পতনের আন্দোলন না। জনগণের দাবি নিয়ে জনগণের দল গণ অধিকার পরিষদ রাস্তায় নেমেছে।’

প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এই তিন দফা দাবির জন্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের রাজনৈতিক ঐকমত্য দাবি করে নুরুল বলেন, ‘বলা হচ্ছে, খেলা হবে। অবশ্যই খেলা হবে। সে খেলায় খেলোয়াড় এবং রেফারি থাকবে। যেমন কুকুর তেমন মুগুর নিয়ে আমরা খেলতে প্রস্তুত। কিন্তু অনেক সংঘাত হয়েছে। আমরা আর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চাই না। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে আমরা রাজনৈতিক ঐকমত্য চাই।’

বিএনপির অবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকের এই করুণ পরিণতির জন্য বিএনপি নিজেই কিছুটা দায়ী। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে ছলচাতুরি না করলে ওয়ান ইলেভেন আসত না। সুতরাং আপনারাও যদি শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে না হাঁটেন আপনাদেরকেও করুণ পরিণতি বরণ করতে হবে।’

সমাবেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তোলেন গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। ছবি: নিউজবাংলা

গণতন্ত্র হত্যার দায়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা এবং প্রধান বিচারপতি খাইরুল হককে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেও উল্লেখ করেন নুর।

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের বিনা ভোটের নির্বাচনের কুশীলব ছিলেন এইচ টি ইমাম। তিনি মারা গেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের কুশীলবদেরও অনেকে মারা গেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার বয়স হয়েছে। আপনাকেও চলে যেতে হবে। দয়া করে এই বারো বছরে জনগণের ওপর যে জুলুম করেছেন এবার ক্ষান্ত দেন। তা না হলে আল্লাহর গজব পড়বে। তিনি ক্ষমা করবেন না।’

তিন দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু মুসা আরিফ বিল্লাহ। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি যেভাবে দেশ শাসন করছেন তার জন্য ত্রিশ লক্ষ শহীদ রক্ত দেয়নি। আপনি মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সবার সঙ্গে প্রতারণা করছেন। এ কাজ করে আপনি আপনার বাবাকেও কলঙ্কিত করছেন। আপনি সমস্ত সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছেন। আপনার প্রতি আহবান থাকবে, নির্বাচনের এক বছর আগে আপনি গদি ছেড়ে দেবেন।’

রেজা-নুরের দল বাংলাদেশে গণজাগরণ সৃষ্টি করবে বলেও মনে করেন এই অধ্যাপক।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খান, ফারুক হাসান, যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর জাহের, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর