নামের মিল থাকায় ২৫ বছর আগে মারা যাওয়া এক নারীকে জীবিত সাজিয়ে তার জমির নামপত্তনের অভিযোগ উঠেছে আরেক নারীর বিরুদ্ধে।
যশোর শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়ার ৫০ বছরের আছিয়া বেগমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ১৯৯৬ সালে মারা যাওয়া জমির মালিক আছিয়া বেগমের ছেলে রামনগর খাঁপাড়ার দেলোয়ার হোসেন অরুন এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করেছেন।যশোরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে দেয়া মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রামনগর খাঁপাড়ার ফজল করিমের স্ত্রী আছিয়া বেগম ৫টি কবলা দলিলমূলে ৮১ শতক জমি কেনেন। রামনগর জেএল ৮৪ মৌজার ১১৭, ১২১, ১১৮, ১১৯ আরএস দাগের যথাক্রমে ৪৪, ০৬, ১৯, ১১ শতক জমি ক্রয় করেন। আর ওই জমির একটি অংশ তিনি বিক্রি করেন এবং বাকি অংশ ছেলে-মেয়েদের নামে দেন। যার নামপত্তনও করা হয়। আবার ক্রেতারা ও ওয়ারিশরা ভোগদখলেও রয়েছেন। এরপর ১৯৯৬ সালে মারা যান আছিয়া বেগম।আছিয়া বেগম মারা যাওয়ার ১৮ বছর পর শংকরপুরের ফজলে করিম চৌধুরীর স্ত্রী আছিয়া বেগম প্রতারণার আশ্রয় নেন। তিনি একটি চক্রের প্ররোচনায় মারা যাওয়া আছিয়া বেগম সেজে ওই জমির জাল কাগজপত্র তৈরি করেন। প্রকৃত আছিয়া বেগমের স্বামীর নাম ফজলে করিম, আর নকল আছিয়া বেগমের স্বামীর নাম ফজলে করিম চৌধুরী। মারা যাওয়া প্রকৃত আছিয়া বেগমের ঠিকানা রামনগর খাঁপাড়া। অন্যদিকে প্রকৃত আছিয়া বেগমের ঠিকানা শংকরপুর চোপদারপাড়া।নিজের জমি বিক্রি করে ও লিখে দিয়ে ১৯৯৬ সালে মারা যান প্রকৃত আছিয়া বেগম। ওই জমি নিজের জমি দাবি করে এবং নিজেকে আছিয়া বেগম সাজিয়ে ভূমি ও রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতারণামূলক কাগজপত্র জমা দেন এবং জমির নামপত্তন করেন। এ ছাড়া মৃত আছিয়া বেগমের জীবিত থাকার সময়ে কয়েকজনের কাছে বিক্রি করা জমি ও ছেলে-মেয়েদের নামে দেয়া জমি সবাই পৃথকভাবে ভোগদখলে আছেন।আর ভুয়া আছিয়া বেগম নিজেকে মারা যাওয়া আছিয়া বেগম সাজিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ৫৩ নম্বর হেবা ঘোষণা দলিল সৃষ্টি করেছেন। ওই দলিল জাল হওয়া সত্ত্বেও সঠিক দলিল হিসেবে নামপত্তনের জন্য মিস মামলা করে ভূমি অফিসে দিয়ে নামপত্তনও করিয়েছেন। এ ঘটনায় আছিয়া বেগম ছাড়াও শংকরপুর চোপদারপাড়ার মৃত রুস্তম চৌধুরীর ছেলে সেলিম চৌধুরী, আল আমিন চৌধুরী, আব্দুল খালেকের স্ত্রী হাসিনা বেগম, ফজলে করিম চৌধুরীর ছেলে ছোরাব চৌধুরী জড়িত। তারা যোগসাজশে এ প্রতারণা করেছেন।মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, একটি বড় ধরনের প্রতারণা হয়েছে এখানে। ওই ভুয়া আছিয়া বেগমকে ইন্ধন দিয়েছে সেলিম চৌধুরী, ছোরাব হোসেন চৌধুরী চক্র। এ ঘটনায় ভূমি অফিসের অসাধুরাও জড়িত রয়েছেন। ২৪ বছর আগে মারা যাওয়া আছিয়া বেগমকে জীবিত সাজিয়ে ১৮ বছর পর তার জমি অন্য এক আছিয়া ভুয়া দলিল করে নামপত্তন পর্যন্ত করে ফেলেছেন। আবার খাতা-কলমে হস্তান্তরও করেছেন। ভূমি অফিসের গাফিলতি রয়েছে এ ব্যাপারে।তিনি আরও বলেন, ‘মামলার বাদীর দাবি সঠিক, তিনি মামলায় জিতবেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষ স্রেফ প্রতারক ও মহা অন্যায়কারী। ওই আছিয়া বেগম চক্র ফাঁসবেন বলেও জানান তিনি। এটি একটি অবিশ্বাস্য ও আজব ঘটনা।’