বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চোখের অস্ত্রোপচার বন্ধ, বিকল হচ্ছে কোটি টাকার যন্ত্র

  •    
  • ৮ নভেম্বর, ২০২১ ১০:৫৫

চক্ষু ওয়ার্ডের কর্মকর্তারা জানান, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি কক্ষের কোটি টাকা দামের দুটি লেজার মেশিন, কালার ফান্ডাস ফটোগ্রাফি ও ওসিটি মেশিনও তিন বছর ধরে ব্যবহার না করায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম। এসব যন্ত্র দিয়ে ডায়াবেটিসের কারণে চোখের রেটিনায় সমস্যা হয়েছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞের অভাবে তিন বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে অস্ত্রোপচার। এতে কার্যত কোনো কাজে আসছে না চক্ষু ওয়ার্ড। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি।

২৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে চোখের দুজন চিকিৎসক থাকলেও সার্জনের অভাবে ছানিসহ কোনো অস্ত্রোপচার করানো যায় না। এ কারণে রোগীদের বিপুল অর্থ ব্যয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চোখের অস্ত্রোপচার করতে হচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের অক্টোবরে চক্ষু বিভাগে সিনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে যোগ দেন চিকিৎসক ইয়ামলি খান। তখন হাসপাতালের চোখের চিকিৎসা চলে পুরোদমে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পদোন্নতি পেয়ে তিনি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বদলি হন।

তিনি চলে যাওয়ার দেড় বছর পর আল আমিন নামের এক চক্ষু বিশেষজ্ঞ হাসপাতালটিতে যোগ দেন। তবে মাসখানেক পর তিনিও বদলি হয়ে যান। এরপর থেকেই বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসকের পদটি শূন্য।

চিকিৎসক না থাকায় গত তিন বছর ধরে হাসপাতালটিতে ছানিসহ চোখের অন্যান্য রোগের অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে দুজন চিকিৎসা কর্মকর্তা শুধু রোগীদের দৃষ্টিক্ষমতা ও চশমার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না- এমন পরীক্ষার সেবা দেন।

হাসপাতাল থেকে আরও জানা যায়, ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক দ্য ফ্রেড হলোজ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের দুস্থ মানুষের চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালটিতে সরঞ্জাম দেয়।

২০০১-০৭ সাল পর্যন্ত যেখানে হাসপাতালটিতে ৬৯৬ রোগীর ছানির অস্ত্রোপচার করা হয়, সেখানে ২০০৮-১৩ সাল পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০১ জন এ সেবা পান। ২০১৪-১৭ সাল পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৯৯ রোগীর ছানির অস্ত্রোপচার করা হয়। ২০১৮ সালে অস্ত্রোপচার করা হয় ৩ হাজার ৭৮৮ জনের।

হাসপাতালটির তৃতীয় তলায় বহির্বিভাগের চক্ষু ওয়ার্ডে এখন চিকিৎসা দিচ্ছেন ডা. ফাতেমা তুজ জোহরা ও ডা. সফিকুল ইসলাম।

তারা জানান, দৃষ্টি পরীক্ষার জন্য চক্ষু ওয়ার্ডে থাকা দুটি স্লিট ল্যাম্পের একটি অকেজো হয়ে গেছে। অন্যটি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া দ্রুত সঠিক লেন্স বা চশমা নির্ধারণ করার যন্ত্রটিও নষ্ট হয়ে গেছে।

চক্ষু ওয়ার্ডের কর্মকর্তারা জানান, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি কক্ষের কোটি টাকা দামের দুটি লেজার মেশিন, কালার ফান্ডাস ফটোগ্রাফি ও ওসিটি মেশিনও তিন বছর ধরে ব্যবহার না করায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এসব যন্ত্র দিয়ে ডায়াবেটিসের কারণে চোখের রেটিনায় সমস্যা হয়েছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়।

চিকিৎসা কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ‘২০-৩০ শতাংশ রোগীই চোখের ছানির অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে আসেন। দুটি স্লিট ল্যাম্পের একটি অকেজো ও অন্যটির লাইট নষ্ট হওয়ায় চোখ পরীক্ষা করতে সমস্যা হয়। ভালো রিডিং আসে না।’

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রানা নুরুস শামস বলেন, ‘হাসপাতালে চক্ষু বিভাগের জন্য জুনিয়র ও সিনিয়র কনসালট্যান্টের দুটি পদ রয়েছে। দুটি পদই শূন্য। তিন বছর ধরে ১০-১৫ বার চিকিৎসক পদায়নের জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে।

‘কয়েক দিন আগেও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। কাজ হয়নি। এতে মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর