চিকিৎসকের অনুমতি মেলার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে নেয়া হচ্ছে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে রওশন এরশাদকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ে।
এ সময়টায় বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে থাকবেন তারই সন্তান রাহ্গির আলমাহি এরশাদ ও পুত্রবুধূ মাহিমা এরশাদ।
দুই সপ্তাহ আগে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রওশনের অবস্থা দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার মতো নয়। সেই সিদ্ধান্ত থেকে এবার বদল করা হয়েছে।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষকের চিকিৎসা নেয়ার কথা রয়েছে।
শুক্রবার নিজের অফিশিয়াল প্যাডে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ কথা জানান রওশনের ছেলে ও রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রাহ্গির আলমাহি এরশাদ। তিনি বলেন, ‘আজ বিকেল ৫টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন তিনি।’
দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন রাহ্গির আলমাহি এরশাদ।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে রওশন এরশাদ নিস্তেজ অবস্থায় আছেন বলে জানান দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
রওশনের রোগমুক্তি কামনায় ওইদিন দুপুরে দোয়া মাহফিলে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বেগম রওশন এরশাদ সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। ব্লাড প্রেশার ও হার্টবিট ভালো আছে, কিন্তু নিস্তেজ অবস্থায় আছেন তিনি। চিকিৎসকরা ইতিবাচক মতামত দিলে তাকে বিদেশে নেয়া হবে।’
রওশন এরশাদ মূলত বার্ধক্যজনিত তিনটি রোগে ভুগছেন বলে তার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বলেও জানান জাপা চেয়ারম্যান।
এরপরই রওশনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার কথা জানালেন তার ছেলে রাহ্গির আলমাহি এরশাদ।
গত ৩১ অক্টোবর সিএমএইচে রওশনকে দেখতে গিয়ে এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মনে হলো ওনার কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। উনি কথা বলতে পারেননি। তবে আমরা যখন কথা বলি তখন তিনি শুনছেন।’
চিকিৎসার জন্য রওশনকে বিদেশে নেয়া হবে কি না- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিদেশে নিয়ে যাওয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা এখন ওনার নেই। তবে আমরা প্রস্তুত আছি।’
অবশ্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। বিদেশে নেয়ার মতো হয়েছে বলেই চিকিৎসকরা ওনাকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি দিয়েছেন।’
গত ১৪ আগস্ট রওশন এরশাদের ফুসফুসে জটিলতা দেখা দেয়। পরে তার অক্সিজেন লেভেল কমতে শুরু করলে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তখন বেশ কিছুদিন তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে কেবিনে নেয়া হয়। হাসপাতালে থাকাকালেই গত ২০ অক্টোবর আবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্বিতীয় দফায় আইসিইউতে নেয়া হয়।
ফুসফুসের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন ৭৮ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ।