দীপাবলি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব হলেও এদিন জ্বালানো প্রদীপের পুণ্যশিখার ব্যাপ্তি সর্বত্র।
এই দিন প্রতিটি বাড়ি, মন্দিরের চারদিক ঘিরে সারি সারি মাটির প্রদীপ, মোম জ্বালিয়ে অন্ধকার ও অশুভ বিদায় করে দেবী কালীকে আবাহন করা হয়।
এ ছাড়াও পূর্বপুরুষদের আত্মার উদ্দেশ্যে শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্বালন করে তাদের স্মরণ করা হয়।
তবে যশোরে এ বছর মুখে কালো কাপড় বেঁধে দেশজুড়ে ঘটা সাম্প্রদায়িক সংঘাতের প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ পূজার্চনা।
গত কয়েক বছর ধরে যশোরের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ আড়ম্বরে উদযাপন হয় আসছে কালীপূজা। মূল পূজা এক দিন হলেও বিভিন্ন মন্দির বা মণ্ডপে আনুষ্ঠানিকতা চলে তিন থেকে চার দিনের।
তবে এ বছর ছিল না সেই উৎসবের আমেজ। ধর্মীয় রীতি মেনে শুধু পূজা আয়োজন করা হয় সব মন্দিরে।
গভীর রাতে পূজা শুরু হলেও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে যশোরের সব মন্দিরে একযোগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে এবং কালো ব্যাজ পরে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ জানান মন্দির কমিটিসহ সনাতন ধর্মবিশ্বাসীরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা নীলগঞ্জ মহাশ্মশান পূজা মন্দিরে এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানান। অনুরূপ কর্মসূচি পালন করে পশ্চিম বারান্দি নাথপাড়া পূজা মন্দির কমিটি।
এ সময় বক্তৃতা দেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অসীম কুণ্ডু, সহসভাপতি দীপক রায়, কার্তিক কুণ্ডু, সাধারণ সম্পাদক যোগেশ চন্দ্র দত্ত, কোষাধ্যক্ষ মৃনাল কান্তি দেসহ অনেকে।
একই কর্মসূচি পালন করা হয় জেলাজুড়ে বিভিন্ন মন্দিরে। কর্মসূচি শেষে সন্ধ্যায় মন্দির প্রাঙ্গণে প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়। গভীর রাতে দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হয়।
এদিকে দীপাবলিতে অজ্ঞতা ও নিরাশার অন্ধকারকে দূরীভূত করতে এবং সাম্প্রদায়িক হানাহানি ভুলে সম্প্রীতির আলোয় উদ্ভাসিত হতে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করে আলোক উৎসব পালন করে সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের যশোর সরকারি এমএম কলেজ শাখার সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া সনাতন ধর্মের এ রীতি ও আচারের সমাপ্তি হবে শনিবার ভ্রাতৃ-দ্বিতীয়ায় ভাই ফোঁটার মাধ্যমে।