বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইটভাটায় ‘চরের মাটি’, হুমকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

  •    
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০১:৪১

উপজেলার কাকচিরা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের বাইনচটকি ফেরিঘাট থেকে উত্তর দিকে কালিরচর পর্যন্ত পরপর ছয়টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় ইট তৈরির জন্য খননযন্ত্র ব্যবহার করে চরের মাটি কেটে নিচ্ছেন শ্রমিকরা। ওই মাটি ভাটায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে। মাটি কাটার জন্য প্রতিটি ভাটায় রয়েছে একাধিক খননযন্ত্র।

বরগুনার পাথরঘাটায় বিষখালী নদীর চরের মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে নদী তীরবর্তী ছয়টি ইটভাটার বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঘেঁষে বিষখালী নদী তীরে জেগে ওঠা চরের মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হয় ইটভাটাগুলোতে। ফলে হুমকিতে পড়েছে বাঁধটি।

মঙ্গলবার উপজেলার কাকচিরা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের বাইনচটকি ফেরিঘাট থেকে উত্তর দিকে কালীরচর পর্যন্ত পরপর ছয়টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় ইট তৈরির জন্য খননযন্ত্র ব্যবহার করে চরের মাটি কেটে নিচ্ছেন শ্রমিকরা। ওই মাটি ভাটায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে। মাটি কাটার জন্য প্রতিটি ভাটায় রয়েছে একাধিক খননযন্ত্র।

স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের খুব কাছ থেকে মাটি কেটে নেয়ার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে এটি।

এভাবে মাটি কেটে নেয়ায় চরাঞ্চলের কৃষিজমিও বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।

বাইনচটকি এলাকায় বাসিন্দা আবদুল হক বলেন, ‘গাঙ্গে ভাডা (ভাটির সময়ে) লাগলেই এই চরের মাডি কাডা শুরু হরে। চরগুলা জাগদে পারে না, মাটি কাইট্টা বড় বড় কুয়া বানাইয়া হালায়। মোরা কিছু কইতে যাই না, হ্যাগো খেমতা ব্যাপক।’

নাসির মিয়া নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এই ভাটার কারণে মোগো ব্যাপক ক্ষতি অয়, কালো বাতাসের কারণে ঠিকমতো শ্বাস নেওন যায় না। বাঁধ দিয়া ইটের ভারী ভারী ট্রাক যাওয়ায় বাঁধের অবস্থাও খারাপ অইয়া গ্যাছে। গরমের সিজনে ধুলাবালিতে ঘর বাড়ি আন্দার অইয়া যায়। মোগো গাছপালায় ফল ধরে না, জমিতে ধান অয় না ঠিকমতো।’

নুরুল আমিন নামের স্থানীয় একজন বলেন, ‘বাইনচটকি এলাকার আরএসবি ব্রিকসের মালিক এলাকার মানুষের জমি একপ্রকার জোর করে কিনে নেছে। কাউরেই সঠিক দাম দেয় নাই। যে দামে জমি নেছে হের দাম অহন তিন গুণ। এহন আবার চর দহল কইরা মাটিও কাইট্টা নেতেছে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আরএসবি ব্রিকসের মালিক গোলাম মোস্তফা কিসলু।

তিনি জানান, যে জায়গার মাটি কাটা হচ্ছে, সেই জায়গা তার রেকর্ড করা সম্পত্তি। এখানে নদীর কোনো জমি নেই। নদীর তীরের মাটি কাটার তথ্য সত্য না।

ওই এলাকার আল মামুন এন্টারপ্রাইজ ব্রিকসের মালিক ও বরগুনা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. শাহাদাত হোসেনের দাবি, নিজের জমি থেকেই মাটি কেটে ভাটায় পাঠানো হচ্ছে। নদী বা সরকারি কোনো জমি সেখানে নেই।

জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, জেলায় প্রায় ৫০টির মতো ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ইটভাটার ইট তৈরির অনুমতিপত্র নেই। তবে যেসব ইটভাটার অনুমতিপত্র আছে, তারা সরকারি নিয়মনীতি মেনেই ইট তৈরি করছে বলে দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরগুনা নদীবন্দরের কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ বলেন, ‘বাইনচটকি এলাকা থেকে কালীরচর পর্যন্ত ছয়টি ইটভাটা রয়েছে। নদীতে চর জেগে উঠলেই ভাটার মালিকরা চরের মাটি কাটেন। এতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, নদীর চর ও তীর থেকে মাটি কেটে নেয়ার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। যদি চর থেকে মাটি কাটা হয় এবং এ কারণে যদি নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়, তাহলে ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর