জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রীকে মেসে আটকে রেখে মারধর ও পরে ক্যাম্পাসে ডেকে এনে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রী বিভাগের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে তিনি অর্থনীতি বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ফৌজিয়া আফরিন প্রিয়ন্তীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন। এ ছাড়া মনোবিজ্ঞান বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিভাগ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিথুন বাড়ৈয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ আনেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা তাকে চড়-থাপ্পড়সহ শারীরিক নির্যাতন করেন। দীর্ঘ চার মাস ধরে তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান। এমনকি ছাত্রলীগের নেতা দিয়ে তাকে ধর্ষণ ও গুম করার হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন। ক্যাম্পাসে আটকে রেখে তার ভিডিও ধারণা করা হয়েছে বলেও জানান।
অভিযোগকারী ওই ছাত্রী পরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেসের তুচ্ছ ঘটনায় আমাকে চড় মারেন প্রিয়ন্তি আপু। রাজনৈতিকভাবে আমাকে ভয় দেখান। হলে আমার সিট অন্য মেয়েদের দিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন।
‘মেসে মারধরের ঘটনার পরের দিন ক্যাম্পাসে গিয়ে আমি ভয়ে তার কাছে মাফ চাইতে গেলে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা মিথুন বাড়ৈ আমাকে ধর্ষণ করার হুমকি দেন। নিরাপত্তাহীন হয়ে আমি এ অভিযোগ করেছি।’
ওই ছাত্রী আরও বলেন, প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানটিনের সামনে মিথুন বাড়ৈ তাকে আবার ধর্ষণের হুমকি দেন।
তবে তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগে এনে ফৌজিয়া আফরিন প্রিয়ন্তী বলেন, ‘অভিযোগকারী ছাত্রী ওই দিন রাতে পাঁচ থেকে ছয়জন ছেলে মেসে এনে আমাকেসহ অন্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়। মেসের কোনো সদস্য তার পক্ষে নেই। এ ছাড়া ওই মেয়ের বিরুদ্ধে পুরোনো মেস ব্যবসার অভিযোগও রয়েছে।’
অভিযুক্ত মিথুন বাড়ৈ বলেন, ‘আমি কাউকে কোনো হুমকি দিইনি। আমাকে এর মধ্যে কেন টানল বুঝতে পারছি না। তবে শুনেছি মেয়েটি একজন মেস ব্যবসায়ী।’
ধর্ষণের হুমকির কথা অস্বীকার করে মিথুন বাড়ৈ বলেন, ‘মেয়েটি বহিরাগত এক ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এনে আমাকে হুমকি দিয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি একপক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তবে ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরের। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রক্টর, অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত এবং অর্থনীতি ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানসহ আমরা একসঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’