একটি কোম্পানি লভ্যাংশ দিয়েছে শেয়ারে ১ টাকা, আরেকটি কোম্পানি লভ্যাংশ দিয়েছে শেয়ারে ২ টাকা আর প্রতি ১০ শেয়ারে ১টি বোনাস। আপাতদৃষ্টিতে দ্বিতীয় কোম্পানির লভ্যাংশকে ভালো মনে হলেও দ্বিতীয়টির লভ্যাংশ হতাশ করেছে বিনিয়োগকারীদের।
যে কোম্পানিটি শেয়ারে ১ টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে সেটির দর লভ্যাংশের প্রতিক্রিয়ায় বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ আর অপরটির দর কমেছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
মুনাফা দিল ফারইস্ট নিটিং
যেটির দর বেড়েছে সেটি হলো ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডায়িং। গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৭৯ পয়সা মুনাফা করে ১ টাকা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত হওয়ার পর রোববার তা প্রকাশ পায় ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে।
বৃহস্পতিবার শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ১৭ টাকা ৯০ পয়সায়। রোববার লেনদেন শুরুই হয় ১৯ টাকা ২০ পয়সায়। পরে বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে ওঠে ২৪ টাকা ৮০ পয়সায়। দিন শেষে কিছুটা কমে লেনদেন শেষ করেছে ২৪ টাকা ১০ পয়সায়।
গত দুই বছরে এটিই কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর। এক বছরে শেয়ার দর সর্বনিম্ন ছিল ৮ টাকা ৮০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে শুরু করে মূলত গত মে মাসের শেষ দিক থেকে।
লোকসান করাল আনোয়ার গ্যালভানাইজিং
অন্য কোম্পানি আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের দর গত ছয় মাসে বেড়ে পাঁচ গুণের মতো হয়ে গিয়েছিল।
এই কোম্পানিটি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে শনিবার বিকেলে। এই বিজ্ঞপ্তিও ডিএসই ও সিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশ পেয়েছে রোববার সকালে।
কোম্পানিটি গত বছর ২ টাকা ৩ পয়সা আয় করেছিল। গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে তাদের আয় হয়েছে ৩ টাকা ৯২ পয়সা।
আয়ে প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো। লভ্যাংশও ২০১৫ সালের পর সবচেয়ে বেশি। তারপরেও বিনিয়োগকারীরা খুশি হননি।
বৃহস্পতিবার শেয়ার দর ছিল ৪৪৩ টাকা ৬০ পয়সা। দিনের লেনদেন শুরু হয় ৪৬৭ টাকায়। তবে দিন শেষে তা নেমে আসে ৪২২ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ দাম কমেছে ২১ টাকা।
তবে দিনের সর্বনিম্ন দাম ছিল ৪১৮ টাকা ৪০ পয়সা।
গত এক বছরে এই কোম্পানিটির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির পেছনে নানা গুঞ্জন কাজ করেছিল। ১৫ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির আয় ব্যাপকভাবে বাড়বে, লভ্যাংশও আসবে ভালো- এমন খবরে আকৃষ্ট হন বিনিয়োগকারীরা। তবে বছর শেষে আয়ে তা সত্য প্রমাণ হয়নি।
তবে আবার চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয়ে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। গত বছরের আয়ের দেড় গুণ তিন মাসেই করে ফেলেছে কোম্পানিটি।
এ সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৫ টাকা ১৩ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৮৯ পয়সা।
গত বছর করোনা সংক্রমণের পর পুঁজিবাজারে কোম্পানির শেয়ার দর একপর্যায়ে ৫৭ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে। এরপর কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইস ঠিক হয় ৬৭ টাকা ৫০ পয়সা।
গত এপ্রিলের শুরু পর্যন্তও শেয়ার দর ছিল ১০০ টাকার নিচে। ওই মাসের শুরুতে দর ছিল ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। এরপর তা টানা বাড়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। একপর্যায়ে দুর্বল এই কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বোচ্চ ওঠে ৪৮৩ টাকায়। পরে সেখান থেকে কিছুটা কমে বৃহস্পতিবার দাঁড়ায় ৪৪৩ টাকা ৬০ পয়সায়।
১৫ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধিত কোম্পানিটিতে শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার।
এ ধরনের স্বল্প মূলধনি বহু কোম্পানির শেয়ার দরই এই সময়ে বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। তবে সবগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং।
ইনডেক্স অ্যাগ্রোতে লভ্যাংশ যত, দাম কমল তার চেয়ে বেশি
চলতি বছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি তার শেয়ারধারীদের আড়াই টাকা করে লভ্যাংশ দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার হয় পর্ষদ সভা। কোম্পানিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই লভ্যাংশ কেবল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দেয়া হবে। উদ্যোক্তা-পরিচালকরা কেউ পাবেন না।
এ সিদ্ধান্ত হওয়ার দিন কোম্পানিটির একেকটি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সায়। আর আড়াই টাকা লভ্যাংশের খবরে রোববার দাম কমল ৩ টাকা।
বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ৫০ কোটি টাকা তুলেছে। প্রতিটি শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ৫০ টাকা করে আর প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্য বিনিয়োগকারীরা পেয়েছে ৬২ টাকা করে।