পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আকার মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকা। সেটিকে কীভাবে ১০ গুণ করা যায়, তা নিয়ে কাজ চলছে।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত সপ্তাহেও মিউচুয়াল ফান্ড বিষয়ে কমিশন সভা করেছে। কীভাবে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতকে ১০ গুণ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। এ জন্য এ খাতের সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে শনিবার অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড (এএএমসিএমএফ) আয়োজিত ‘ইনস্টিটিউশনাল রোল ইন সাসটেইনেবল ফাইন্যান্সিং’বিষয়ক এক অনলাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো সর্বশেষ হিসাবে বছরে যে পরিমাণ লভ্যাংশ দিয়েছে, তা অন্য যেকোনো খাতের তুলনায় ঈর্ষণীয়।
শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, এ বছর মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো ভালো রিটার্ন দিয়েছে। ফলে এ খাতের উন্নয়নের এখনই সময়।
ফান্ডগুলোর প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়ার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে তিনি বলেন, ‘আমি যখনই ভারতের আইপিএল খেলা দেখি, তখনই তাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিজ্ঞাপন দেখি। দেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো নিজেদের প্রচারের খরচ বেশি মনে করলে তা অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে করুক।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সভাপতি ড. হাসান ইমাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দেশের রাজস্ব আয়েও পুঁজিবাজার বড় অবদান রাখবে বলে জানান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার থেকে আগে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করা হতো, সেটি এখন শত ভাগ বেড়ে যাবে। এ জন্য মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, তিনিও সম্মতি জানিয়েছেন।’
মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আমার কাছে অনেকে ব্যাক্তিগতভাবে কোন মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করবেন তা জানতে চান, পাশাপাশি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে মিউচুয়াল ফান্ডের মতো দক্ষ জনবল কোথাও পাওয়া যায় না। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে ভয় ও নেতিবাচক চিন্তা কাজ করে, সে জায়গা তাদের থেকে বের করে নিয়ে আসতে হবে আপনাদেরই।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির হরহামেশাই দ্বিমত পরিলক্ষিত হয়। সম্প্রতি বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানেও চেয়ারম্যান অবণ্টিত লভ্যাংশ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মন্তব্যের সমালোচনা করেন। বলেন, লভ্যাংশ ও আমানত এক জিনিস নয়।
শনিবারের অনুষ্ঠানে বিএসইসির চেয়ারম্যান পুঁজিবাজার বড় হলে ব্যাংকের আয়ও বাড়ে বিষয়টি স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়, যার পুরোটাই চলে যায় ব্যাংকে। সুতরাং পুঁজিবাজার বড় হলে মানি মার্কেটের ক্ষতি হবে, এটা মনে করার কিছু নেই। বরং পুঁজিবাজার যত বড় হবে, নানা ফিসহ ব্যাংকের আয় তত বাড়বে।’