‘এখনও বিদ্যুৎ চলে যায়৷ আমি মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়িতে যাই। তখন বিদ্যুৎ চলে গেলে আমাকেও মাঝে মাঝে জেনারেটর চালাতে হয়। আমি আশা করছি, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এ বিষয়টির দিকে নজর দেবেন।’
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্র ‘ওয়েসিস’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উল্লিখিত কথাগুলো বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের দাবি, এখানে তার ১০ বেডের হাসপাতালের দিকে একটু নজর দিতে। আমি বলতে চাই, ওনার (নসরুল হামিদ) ১০ বেডের হাসপাতালে যন্ত্রপাতি দিয়ে ভরে দেব। কিন্তু আপনি শুধু বিদ্যুৎটা ঠিকমতো চালিয়ে যায়েন।’
টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন এক দিনে দিয়েছি, যা পৃথিবীর অনেক দেশ এখনও দিতে পারেনি। আমাদের সামনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ৮০ লাখেরও বেশি ভ্যাকসিন দিতে পারব বলে আশা রাখি।’
প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট বিষয়ে উদার জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার ভ্যাকসিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছেন এবং বলেছেন, যত টাকা লাগে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে, যাতে করে সারা দেশের মানুষ সুরক্ষিত থাকতে পারে। ভ্যাকসিন নিলে করোনায় আক্রান্ত হলেও অন্তত মানুষের মৃত্যু ঘটে না।’
টিকার বিষয়ে বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দিয়েছি। প্রায় দুই কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দিতে সক্ষম হয়েছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কমিটমেন্ট ছিল বাংলাদেশের জন্য ২০ শতাংশ করোনার টিকা ফ্রি দেয়া। কিন্তু তারা বলেছে, বাংলাদেশ যেহেতু ভালো ভ্যাকসিন দিতে পারছে, এতে করে আমাদের তারা ৪০ শতাংশ ফ্রি দিতে চেয়েছে।
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের কথা দিয়েছে, আমাদের ভ্যাকসিন তৈরি করতে যা যা সাপোর্ট প্রয়োজন, তারা সেসব সাপোর্ট দেবে। এতে করে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন তৈরির পর বিদেশেও রপ্তানি করতে পারবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে দেশের কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে থাকে না। করোনা এখন নিয়ন্ত্রণে আছে; আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত। মাদক নিলেই যে মানুষ অপরাধী হয়ে যায়, কথাটি সঠিক নয়। মাদককে ঘৃণা করতে হবে; মাদকাসক্তকে নয়। কেউ মাদকাসক্ত হলে তাকে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করতে হবে।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজিজুল ইসলামসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।