‘আগে রিকশা চালাইতাম, হোডেলে কাম করতাম, রাজমিস্ত্রির জোগালিগো লগে থাকতাম। হেয়ার পরে অসুস্থ হইয়া কাজ কাম করতাম পারি না। স্যারেরা ভ্যান দিছে, কাচা তরি-তরকারি দিছে। আল্লায় যদি চায় এইডা দিয়াই সংসার চালামু।’
ভ্যান পেয়ে এভাবেই আবার ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলছিলেন ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর সিফলি গ্রামের মোতাহার বেপারি।
মোতাহার একাই নন, ভ্যান পেয়েছেন সদর উপজেলার আরও ১০ জন কর্মহীন মানুষ। ভোলার ইলিশা সড়কে কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার সকালে ভ্যান বিতরণ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক বাবু।
করোনাকালে কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়া ১০ জন মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষে কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন প্রত্যেককে একটি ভ্যান এবং সেই সঙ্গে ২০ কেজি আলু, ২০ কেজি মিষ্টিকুমড়া, ২০ কেজি কচুর ছড়া, ২০ কেজি পেঁপে, ১০ কেজি লাউ, ১০ কেজি মূলা, ১০ কেজি পেঁয়াজ, ৫ কেজি ঢেঁড়শ, ৫ কেজি মরিচ ও ৫ কেজি রসুন সবার মাঝে বিতরণ করে।
ভ্যান পেয়ে পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গুপ্তমুন্সি গ্রামের খালেক মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে ভ্যান ভাড়া লইয়া কাচামালের ব্যবসা করতাম। এহন অসহায় হইয়া পড়ছি। বুড়া মানুষরে কেউ কামে লয় না। পুঁজিবাট্টাও নাই। হেরা যা দিছে শুকর আলহামদুলিল্লাহ।’
রাজাপুর ইউনিয়নের মিজি বাজার এলাকার মো. দুলাল বলেন, ‘নদীতে জেলের কাজ করতাম। নদীর পাড়ে বাড়ি থাকায় মেঘনায় বাড়িটা লইয়া গেছে। এরপর ছুডা কাম করতাম। করোনা আইয়া হেইডাও লইয়া গেল।
‘পরে স্যারেগো খোঁজ পাইয়া যোগাযোগ করলে হেরা ভ্যান ও তরকারি দিছে। আশা করি এইডি দিয়া সংসার চালাইতে পারমু।’
কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক বাবুব জানান, তিনি তার চাচা কাঞ্চন মিয়া ও চাচি ফাতেমার নামের এই ফাউন্ডেশনের নামকরণ করেছেন। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভোলার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ‘এর আগেও আমরা বিভিন্ন সময় অসহায় মানুষকে সহায়তা দিয়েছি। কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন সবসময় মানুষের পাশে থাকবে।’