মৌলভীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে আচরণবিধি ভেঙে প্রচারের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ভানু লাল রায়ের বিরুদ্ধে।
প্রতীক বরাদ্দের আগেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে নৌকার জন্য ভোট চাইতে দেখা গেছে তাকে।
ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনলেও অন্য প্রার্থীরাও বসে নেই। তারাও অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন ঘরোয়া সভায়।
তবে নির্বাচন কর্মকর্তাদের দাবি, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।
নির্বাচন অফিস থেকে জানা যায়, গত ০২ সেপ্টেম্বর এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। রোববার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২০ তারিখ প্রতিক বরাদ্দের পর ভোট হবে ৭ অক্টোবর।
নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রচারের নিয়ম নেই। তবে শ্রীমঙ্গল শহর ঘুরে দেখা গেছে, শহরের মৌলভীবাজার সড়কের নাহার পেট্রলের পাশে সেন মার্কেটে তৈরি করা হয়েছে আলোকসজ্জাসহ নৌকা। শহরের শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা, কার ও মাইক্রোবাসে সাটানো হয়েছে প্রার্থীর ছবি সম্বলিত স্টিকার। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে প্রার্থীকে নিয়ে মৌলভীবাজার সড়কে মোটরসাইকেল শোডাউনও হয়।
এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিন ‘বিজয়ের মালা আনব, ৭ তারিখ নৌকা মার্কায় ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যাব’-এমন ব্যানার নিয়ে উপজেলা রাধানগর, রুপসপুর, সদর ইউনিয়ন, দক্ষিণ উত্তরসুর, আমানতপুর এলাকায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে নৌকার জন্য ভোট চাইতে দেখা গেছে। এসব অনুষ্ঠানের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এসেছে।
নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজল হক বলেন, ‘আমরা নির্বাচন অফিসে বার বার অভিযোগ দিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি। আমরা মর্মাহত। এভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার করার ফলে শ্রীমঙ্গলের শান্তি নষ্ট হবে।
‘আমরা চাই একটি সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এভাবে প্রতিদিন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার করা ঠিক হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে জানতে শনিবার বিকেলে নৌকার প্রার্থী ভানু লাল রায়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি। তবে তার এক ঘনিষ্ঠজন ফোন ধরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন; ব্যস্ত। পরে কল দেন।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদ হোসেন ইকবাল বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি আমার জানা নেই। ২০ তারিখ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে আমাদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি হবে। সেখান থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হবে।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তপন জ্যোতি অসিম বলেন, ‘তফসিল ঘোষণা করার পর এভাবে কেউ প্রচার করতে পারবের না। সেটা আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে। আমাদের কাছে কোনো প্রার্থী অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’