আশ্রয়ণ প্রকল্পে ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত ঘরে দুর্নীতি ও অনিয়মকারীদের বিচারের দাবিতে মানবন্দন হয়েছে।
‘বাংলাদেশ ভুমিহীন আন্দোলন’-এর ব্যানারে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ তোলেন, এই প্রকল্পে প্রকৃত ভূমিহীনরা ঘর না পেয়ে প্রভাবশালীরা ঘর পেয়েছেন। এ ছাড়া, ঘর নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে দেশের ভূমিহীন অসহায় মানুষের এই প্রকল্পে কোনো ধরনের দুর্নীতি-অনিয়ম দেশের ভূমিহীনরা সহ্য করবে না। আমরা আমাদের রাষ্ট্রীয় মৌলিক অধিকার যেকোনো মূল্যে আদায় করে নেব।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য এসেছে সংবাদমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীও।
উপহারের ঘর নিয়ে কোনো দুর্নীতি সহ্য করা হবে না জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ‘অবশ্যই এখানে দুর্নীতি করলে আমি সেই দুর্নীতি মানতে রাজি নই। গরিবকে ঘর করে দেব, সেখান থেকেও টাকা মেরে খাবে?’
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। এতে ভূমিহীনরা খুশি হয়েছিল। প্রয়োজনের তুলনায় ঘরের সংখ্যা অপ্রতুল হলেও কয়েক জেলায় এই ঘর ভূমিহীনদের মাঝে ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। অনেক জায়গায় প্রকৃত ভূমিহীনরা ঘর না পেয়ে প্রভাবশালীরা ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘যাদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে তারা এখন সে ঘরে থাকতে ভয় পাচ্ছেন। জীবন রক্ষার আশ্রয়স্থল এখন জীবননাশের হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও বরাদ্দের হিংসভাগ দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। আবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন হাতুরি-শাবল দিয়ে দুর্বৃত্তরা ঘরে ভেঙেছেন। আমরা দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্ত সকলের পরিচয় জাতির কাছে প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।’
এ সময় বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি পেশ করা হয়।
০১. প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।
০২. স্থানীয় সরকার নির্দলীয় হতে হবে ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল করতে হবে।
০৩. প্রত্যেক জেলার খাসজমি বণ্টন কমিটিতে ভূমিহীনদের প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে।
০৪. প্রত্যেক জেলায় কল-কারখানা গড়ে তুলে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
০৫. জাতপাতের নামে শ্রেণি বৈষম্য দূর করে মেহনতি জনতাকে বিভক্তিকরণ নীতি বন্ধ করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল আমীন, কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইদুল রহমান লুৎফর, সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন ভূঁইয়া, সহ সাধারণ সম্পাদক খালেদুজ্জামান পারভেজ বুলবুলসহ বিভিন্ন জেলা নেতৃবৃন্দ।