বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাবান্ধায় দিনের পর দিন আটকা ৪ শতাধিক ট্রাক

  •    
  • ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৭:৫২

স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে গত ৩১ আগস্ট থেকে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। এলসি চালান জটিলতা ও বন্দর ইয়ার্ডে জায়গার অভাবে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে আছে অনেক পণ্যবাহী ট্রাক।

১০ দিন ধরে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আটকে আছে চার শতাধিক রপ্তানিমুখী পণ্যবাহী ট্রাক।

স্থলবন্দর এলাকাসহ বাংলাবান্ধা-তেঁতুলিয়া জাতীয় মহাসড়কের প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। দুর্ভোগে পড়েছেন দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দরের ট্রাকচালক, শ্রমিক, ব্যাবসায়ী, পথচারীসহ স্থানীয় সাধারণ মানুষ।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ধীরগতি এবং ট্রাক স্ট্যান্ড না থাকায় সড়কে দাঁড়ানো ট্রাকের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে নিয়মের চাইতে বেশি গাড়ি ছেড়ে সমস্যা তৈরির জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়ে বলছে, অচিরেই সমস্যা কাটাতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারত, নেপাল ও ভূটানের সঙ্গে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে গত ৩১ আগস্ট থেকে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। লেটার অফ ক্রেডিট (এলসি) চালান জটিলতা ও বন্দর ইয়ার্ডে জায়গার অভাবে মহাসড়কে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেক পণ্যবাহী ট্রাক।

পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে অপেক্ষায় চার শতাধিক ট্রাক। ছবি: নিউজবাংলা

এসব ট্রাকে পোল্ট্রি ফিড, সয়াবিন, ভূষিসহ বিভিন্ন পণ্য ভারতের ফুলবাড়ি হয়ে নেপাল, ভূটানে রপ্তানি হওয়ার কথা।

আমদানি করা পাথর, চা ফ্যাক্টরির জন্য আনা যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন পণ্য খালাস এবং রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ট্রাক দ্রুত পাঠাতে না পারায় ট্রাকগুলো আটকে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হঠাৎ করে আমদানি-রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় বন্দরে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমদানি-রপ্তানির তুলনায় বন্দরের জায়গা সংকটই যানজটের অন্যতম কারণ।

এদিকে ভারতের ফুলবাড়ি স্থলবন্দরে নেপাল, ভূটানের জন্য জায়গা বরাদ্দ কম থাকায় ওই দুই দেশে রপ্তানির জন্য পণ্যবাহী ট্রাকগুলো সময় মতো যেতে পারছে না। এ কারণেও রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, স্থলবন্দরের ইজারাদারের সক্ষমতার অভাবে বন্দরের ইয়ার্ডে পণ্য খালাসে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকা এবং পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধা না থাকাও ১০ দিন ধরে দীর্ঘ যানজটের কারণ।

আবদুর রশিদ নামের এক ট্রাকচালক বলেন, ‘আমি নারায়নগঞ্জের কাচঁপুর থেকে সয়াবিনের দানা নিয়ে এসেছি ১০ দিন হলো। এগুলো পাঠানো হবে নেপালে। এখানে অব্যাবস্থাপনার কারণে গাড়ি নিয়ে সড়কে আটকে আছি। পার্কিংয়েরও কোনো ব্যবস্থা নাই। কবে পণ্য নিয়ে নেপালে যেতে পারবো জানি না।’

রফিকুল ইসলাম নামে আরেক ট্রাকচালক বলেন, ‘নয় দিন আগে সিটি গ্রুপের পণ্য নিয়ে চট্রগ্রাম থেকে আসছি। পণ্যগুলো নিয়ে যাবো ভুটানে। এখানে আইসা তো আটকায়ে গেছি। গাড়ি নিয়ে আটকে আছি। এখানকার সিএন্ডএফ এজেন্টও আমাদের পাত্তা দিচ্ছেন না।

‘এখানে থাকা খাওয়ার তেমন কোনো ভাল ব্যবস্থা নাই। হাতে টাকা পয়সা যা ছিল শেষের দিকে। বাকি কয়েকদিন কীভাবে চলবো জানি না।’

বাংলাবান্ধা আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন বলেন, ‘বন্দরে পর্যাপ্ত গাড়ি ও মালামাল রাখার জায়গা নেই। এ কারণে সড়কে সারি করেই গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে আছে। এ সমস্যা কেটে গেলে সব ব্যবসায়ী উপকৃত হবেন। না হলে সবাইকে লোকসান গুনতে হবে।’

পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে অপেক্ষায় চার শতাধিক ট্রাক। ছবি: নিউজবাংলা

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দিনে ৫০-৬০টির বেশি গাড়ি কারপাস দেয়ার সুযোগ নেই। গাড়ি আসছে ১০০টিরও বেশি। তারা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখনি গাড়ি চালকদের নিয়ে বলতে যাচ্ছি, তখনি তারা কারপাস দেখাচ্ছেন। দিনে কতগুলো গাড়িকে কারপাস দেয়া যায় এ নিয়ে কাস্টমস মাথা ঘামায় না। তাদের অবহেলার কারণে এতো ভোগান্তি।’

অন্যদিকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার মবিন-উল-ইসলাম বলেন, ‘আগে রপ্তানি কাজে এত পরিমাণে গাড়ি আসত না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার কারণে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে।’

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের জরুরি আলোচনা সভায় যানজট নিরসনে আনসার নিয়োগ এবং অস্থায়ী ট্রাক স্ট্যান্ড বসানোর উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছি। বন্দরের জায়গা বাড়ানোসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বন্দরের উন্নয়নে সব সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।’

এ বিভাগের আরো খবর