বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট নওশাদ আতাউল কাইউম দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন মন্তব্য করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছেন, জীবন দিয়ে মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন ওই ক্যাপ্টেন।
ভারতের নাগপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার সকালে নওশাদের মরদেহ আসার পর দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিমান পরিবারের একজন সদস্য, দক্ষ পাইলট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিভিন্ন সময়ের ও সংকটকালীন মুহূর্তে তিনি তার দক্ষতার পরিচয় দিয়ে গেছেন এবং উনি একজন ভালো ক্যাপ্টেন ছিলেন। উনি তার জীবন দিয়ে মানুষগুলোকে বাঁচিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ক্যাপ্টেন নওশাদের অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত, ব্যথিত ও মর্মাহত, যার অপূরণীয় ক্ষতি কোনো দিন ভুলে যাওয়ার না। এ ক্ষতি গোটা জাতির। কারণ তার মৃত্যু হয়েছে দায়িত্বরত অবস্থায়।
‘পাইলট নওশাদের মৃত্যু এক ভিন্ন মাত্রা বহন করে। এ জন্য আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ ও গর্বিত।’
নওশাদের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন এবং তার শোকাহত পরিবারকে এই শোক কাটিয়ে ওঠার তৌফিক দান করেন।’
নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসাধীন ক্যাপ্টেন নওশাদকে সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালটির হিমঘরে রাখা হয়েছে তার মরদেহ।
বিমান থেকে নামানো হচ্ছে পাইলট নওশাদের মরদেহ। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
গত শুক্রবার সকালে ওমানের মাসকাট থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে ঢাকায় ফেরার পথে মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন নওশাদ। এ সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন।
এমন পরিস্থিতিতে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি ভারতের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। ওই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ১২৪ জন। পরে জানা যায়, নওশাদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
ওই রাতেই বিকল্প পাইলট ও ক্রু পাঠিয়ে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। আর নওশাদকে ভর্তি করানো হয় নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে।
এর আগে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ঝুঁকিপূর্ণ একটি ফ্লাইট নিরাপদে অবতরণ করিয়ে দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হন পাইলট নওশাদ। বিজি-১২২ ফ্লাইটটিতে ১৪৯ যাত্রী, ৭ ক্রু ও দুজন কো-পাইলট ছিলেন। বলতে গেলে নওশাদের দক্ষতায় বেঁচে যায় তাদের জীবন।