বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে ধরনের বক্তব্য দেন তার সঙ্গে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের সময় অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদের বানোয়াট বক্তব্যের তুলনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবকে আমি সম্মান করলেও ক্রমাগত মিথ্যা বলার কারণে জনগণ তাকে মিথ্যা ফখরুল বলছে।’
রাজধানীতে উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠে জাতীয় শোক দিবস স্মরণে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত আলোচনায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন মন্ত্রী।
এ সময় তিনি মির্জা ফখরুলের সমালোচনা করেন চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার সমাধি ইস্যুতে।
গত ২৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই সমাধিতে জিয়াউর রহমানের দেহাবশেষ ছিল না। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা বিষয়টি নিয়ে তর্ক বিতর্ক করছেন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানে নিহত হন জিয়াউর রহমান। তাকে সেখান থেকে আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে রাঙ্গুনিয়ায় সমাহিত করা হয় বলে তথ্য আছে।
মাস দুয়েক পর দেহাবশেষ সেখান থেকে তুলে এনে চন্দ্রিমা উদ্যানে সমাহিত করার কথা জানানো হয়। তবে যে কফিন আনা হয়েছিল, তার মুখ খোলা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দুই দিন পর মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ দাফন করা হয়েছিল। এটা তো চাঁদের আলোর মতো পরিষ্কার। এর চেয়ে বড় সত্য আর কিছু হতে পারে না। কারণ তৎকালীন সেনা অধিনায়ক জেনারেল এরশাদ নিজেই জিয়াউর রহমানের লাশ বহন করেছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি যে বারবার জিয়ার লাশের কথা বলছেন, আমার প্রশ্ন, তিনি কবরে জিয়ার লাশ নিজে দেখেছেন কি না! এ যেন স্কুল শিক্ষার্থীদের মিছিল হচ্ছে ধানমন্ডিতে আর উত্তরায় বসে নওশাবা কাল্পনিক বক্তব্য দিচ্ছে।’
২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন চলার সময় নওশাবা ফেসবুক লাইভ করে আলোচিত হয়ে উঠেন।
৪ আগস্ট ঢাকার জিগাতলায় সংঘর্ষ বাঁধলে ফেসবুকে লাইভে এসে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু ও একজনের চোখ তুলে ফেলার ‘খবর’ দেন নওশাবা, যা পরে গুজব প্রমাণিত হয়।
র্যাব ওই দিনই নওশাবাকে আটক করে তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করে। ওই মামলায় দুই দফায় মোট ৬ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। পরে ২১ আগস্ট তিনি মুক্তি পান।
গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই নওশাবা ফেসবুক লাইভে এসে ভুল তথ্য দেয়ার জন্য ক্ষমা চান।
করোনাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের পাশে ছিল জানিয়ে হাছান বলেন, ‘বিএনপি নেতারা করোনার প্রথম দফায় ত্রাণ বিতরণের ফটোসেশন করেছেন, দ্বিতীয় দফায় সেটিও করেননি।’
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সমন্বয়ক হেদায়েতুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএ মান্নান কচিসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।