বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বান্দরবান গিয়ে ‘উচ্ছৃঙ্খল’ নোবেল

  •    
  • ২৭ আগস্ট, ২০২১ ২০:৪৬

‘উনি আমাদের হোটেলে পরশু দিন আসেন। ওনার সঙ্গে একজন মেয়ে ছিল। ওনারা কাপল পরিচয়ে একটি কাপল রুম নেন। প্রথম দিন কোনো সমস্যা হয়নি। সমস্যা করেছেন গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে। রাত ১১টা ২০ মিনিট থেকে শুরু করে তিনটা-সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তিনি মাতলামি করেছেন। উনি অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছেন। আমাদের স্টাফদের মেরেছেন। আমরা তার মাতলামি সামলাতে না পেরে পুলিশকে জানাই।’

বান্দরবানে ঘুরতে গিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটানোর পর কণ্ঠশিল্পী নোবেলকে সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। তার আচরণে বিরক্ত হয়ে একটি বাস তাকে ও তার সঙ্গীদের তুলতে রাজি হয়নি।

পুলিশ বলছে, নানা সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসা নোবেল যে হোটেলে উঠেছিলেন, সেখানে চিৎকার-চেঁচামেচি করেছেন। তার বিরুদ্ধে হোটেল মালিক ও কর্মীদের মারধর করার অভিযোগও পেয়েছে বাহিনীটি।

হোটেল কর্তৃপক্ষ সামাল দিতে না পেরে জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ কল দেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে শান্ত করে হোটেল কক্ষে পাঠায়।

এসব বিষয়ে অবশ্য নোবেলের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। হোটেলের ঘটনার বিষয়ে জানতে নোবেলের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাকে এসএমএস পাঠালেও জবাব আসেনি।

ঘটনা যা ঘটেছে

বান্দরবানের গার্ডেন সিটি নামের একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। হোটেলে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার অবস্থান করেছিলেন নোবেল।

তার সঙ্গে ‘কাপল’ পরিচয়ে এক মেয়ে দুই দিনই ছিলেন হোটেলে। অন্য এক কক্ষে বান্দরবানের দুজন যুবক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, হোটেলে যাওয়ার পথে রুমা বাসস্ট্যান্ডেও নোবেল অসংলগ্ন আচরণ করেন। যে কারণে একটি বাস তাকে পাহাড়ি রাস্তায় নিয়ে যেতে অসম্মতি জানায় এবং তাকে না নিয়েই রুমা বাসস্ট্যান্ড থেকে ওই বাসটি ছেড়ে যায়।

হোটেলটির মালিক মো. জাফর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি আমাদের হোটেলে পরশু দিন আসেন। ওনার সঙ্গে একজন মেয়ে ছিল। ওনারা কাপল পরিচয়ে একটি কাপল রুম নেন। প্রথম দিন কোনো সমস্যা হয়নি। সমস্যা করেছেন গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে। রাত ১১টা ২০ মিনিট থেকে শুরু করে তিনটা-সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তিনি মাতলামি করেছেন।

‘উনি অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছেন। আমাদের স্টাফদের মেরেছেন। আমরা তার মাতলামি সামলাতে না পেরে পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে তাকে দীর্ঘ সময় ধরে বোঝানোর পর রুমে পাঠানো সম্ভব হয়।’

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হোটেল কক্ষ ছাড়তে বাধ্য হন নোবেল ও তার সঙ্গীরা। তবে যেন হোটেল না ছাড়তে হয়, সে জন্য নোবেল বান্দরবান ছাত্রলীগের দুই নেতাকে ডেকে আনেন হোটেলে।

ছাত্রলীগের দুই নেতা পুরো ঘটনা শুনে তার পক্ষে কিছু করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর নোবেল ও তার সঙ্গীরা হোটেল ত্যাগ করেন।

বান্দরবানের এই হোটেলে দুই দিন অবস্থান করেন নোবেল। পরে তার আচরণে বিরক্ত হয়ে সঙ্গীসহ তাকে বের করে দেয়া হয়

হোটেলের মালিক জাফর বলেন, ‘আমি তাকে চিনতাম না। আমার স্টাফরা তার পরিচয় দিল, তিনি কণ্ঠশিল্পী। প্রথম দিন আসার পর তার সঙ্গে আমাদের রিসিপশনে অনেকে ছবি উঠিয়েছেন।

‘দ্বিতীয় দিনেও তার পাশের রুমের একজন ছবি ওঠাতে চায়। এ নিয়ে তিনি শোরগোল শুরু করেন। রাতে তার চিৎকার-চেঁচামেচিতে অন্যান্য কক্ষে থাকা অতিথিরাও বেরিয়ে আসে। এরপর উনি যা যা আচরণ করেছেন, তাতে কোনোভাবেই স্বাভাবিক মনে হয়নি। পরে শুনেছি, পাহাড়ে ঘুরতে এসে তিনি নাকি বিভিন্ন জায়গায় মাদক সেবন করেছেন।’

পুলিশ যা বলছে

বান্দরবান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৯৯৯ থেকে কল পেয়ে আমাদের অফিসারকে গতকাল রাতে হোটেলে পাঠিয়েছিলাম। হোটেল মালিক ফোন করেছিলেন। আমাদের অফিসার মধ্যরাতে ওখানে গিয়ে নোবেলকে শান্ত করে কক্ষে পাঠান। ওনার আচরণ কোনোভাবেই স্বাভাবিক ছিল না বলে আমাকে ওই অফিসার জানিয়েছেন।’

গাঁজা সেবনের ছবি ফেসবুকে

এই সফরে গিয়ে নোবেল তার নারী সঙ্গীসহ এমন একটি ছবি তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন, যাতে মনে হয়, তিনি গাঁজা সেবন করছেন।

বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পাহাড়ি ঝরনার পাশে নোবেল একটি মেয়েকে নিয়ে বসে আছেন, এমন একটি ছবি পোস্ট করেন। মেয়েটি কে, তার পরিচয় দেয়া হয়নি। আর তিনি ঠিক কী করছিলেন, সেটিও একেবারে স্পষ্ট না হলেও গাঁজার কলকি টানছেন, এমন মনে হতেই পারে কারও কাছে।

এই মনে হওয়াটা একেবারে অমূলক নয় এ কারণে যে, ছবির সঙ্গে নোবেল যে একটি লাইন লিখেছেন তা হলো, ‘গাঁজার নৌকা পাহাড়তলী যায়, ও মিরাবাই’।

মেয়েটি নোবেলের স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ নন, এটা নিশ্চিত। তিনি এই পোস্ট দেখে খেপেছেন ভীষণ।

নোবেলের ফেসবুক পেজে ছবিটি পোস্ট করার পর ভীষণ খেপেছেন তার স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ

নোবেলের পোস্টের দুই ঘণ্টা পরে সালসাবিল মাহমুদ তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান দেন তার ক্ষোভের কথা। পুলিশ কেন নোবেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি, সে প্রশ্নও রাখেন তিনি।

সালসাবিল লেখেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি লজ্জিত এ রকম একটা দেশে জন্মগ্রহণ করে। অনুগ্রহপূর্বক বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী যেন আজ থেকে কোনো নেশাগ্রস্ত স্টুডেন্ট বা ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার না করে অথবা শাস্তি না দেয়।’

নোবেল নেশা করছেন- এ বিষয়ে নিশ্চিত তার স্ত্রী। আর এমন একটি ছবি ফেসবুকে দেয়া মেনে নিতে পারছেন না তিনি।

সালসাবিল লেখেন, ‘আমাদের দেশের ইনফ্লুয়েন্সাররা যেখানে নিজেদের নেশাগ্রস্ত ছবি আপলোড করে এটাকে একটি ট্রেন্ডে পরিণত করেছে এবং বাংলাদেশ প্রশাসন এ বিষয়ে কিছু করতে অক্ষম, সেখানে অন্য জনগণদের নেশা এবং মাদকদ্রব্য-সংক্রান্ত বিষয়ে হেনস্তা করার অধিকার বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী আর রাখে না।’

এ বিভাগের আরো খবর