করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১১৭ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারালেন মোট ২৫ হাজার ৮৪৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যাটি আগের দিনের চেয়ে বেশি হলেও কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে অন্য একটি তথ্য। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টায় সারা দেশে যত মানুষ নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন, তাদের মধ্যে শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এই হার গত ৯ জুনের পর সর্বনিম্ন। সেদিন শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ।
আগের দিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১০২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল, যা দুই মাসে ছিল সর্বনিম্ন।
শুক্রবার বিকেলে অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫২৫ জনের দেহে। আর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৭ হাজার ৫৭৮ জনের।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ১৫৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৬ হাজার ৪৮৫ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৪ হাজার ৩৭০ জন। সুস্থতার হার ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
গত একদিনে মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৫৬ জন ও নারী ৬১ জন। এর মধ্যে দুইজন শিশু রয়েছে। বাকিদের বয়স বিশোর্ধ্ব ৩, ত্রিশোর্ধ্ব ৯, চল্লিশোর্ধ্ব ১৬, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৯ ও ষাটোর্ধ্ব ৩৮ জন। সত্তরোর্ধ্ব ১৬, আশির্ধ্ব ১১, নব্বোর্ধ্ব রয়েছেন ৩।
বিভাগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এরপরই রয়েছে খুলনা বিভাগ, ৩৭ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ৩২ জন, রাজশাহীতে ১১, বরিশালে ৬, সিলেটে ১০, রংপুরে ৫ ও ময়মনসিংহে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত মার্চ থেকে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার মাস পাঁচেক পর সম্প্রতি পরিস্থিতির উন্নতির চিত্র দেখা যাচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরেই ধারাবাহিকভাবে কমছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে কমছে শনাক্তের হার।
গত এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাই মাসে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২০ ছাড়িয়ে এক পর্যায়ে ৩০ শতাংশও ছাড়িয়ে যায়। এই অবস্থায় এপ্রিলে লকডাউন ও পরে জুলাইয়ে দেয়া হয় শাটডাউন নামে বিধিনিষেধ।
গত ১১ আগস্ট থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হলেও এরপর থেকে রোগী ও মৃত্যু ধীরে ধীরে কমে আসছে। শাটডাউন চলাকালে নিয়মিতভাবে ২৪ ঘণ্টায় আড়াইশর বেশি মানুষের মৃত্যুর তথ্য এসেছে। এ ছাড়া করোনা উপসর্গে মারা গেছে আরও বহুজন।
ওই সময়ে প্রথমে রাজশাহী বিভাগ ও পরে খুলনা বিভাগে মৃত্যু ছিল সবচেয়ে বেশি। হাসপাতালগুলোতে রোগীর জায়গা দেয়া যাচ্ছিল না, দেখা দেয় অক্সিজেন সংকট।
বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রথমে ঢাকায় অতটা না ছড়ালেও জুনের শেষ দিকে রাজধানী ও আশেপাশের এলাকাগুলোতেও ছড়াতে থাকে। হাসপাতালে তৈরি হয় ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই’ অবস্থা। বিশেষ করে আইসিইউ সংকটে রোগীদের স্বজনরা পড়েন দুর্ভোগে।
তবে এখন করোনা রোগীর জন্য বরাদ্দ করা হাসপাতালের শয্যার বেশিরভাগ অংশই ফাঁকা পড়ে আছে। আইসিউই ইউনিটগুলোও এখন চাইলেই পাওয়া যাচ্ছে।