জয়পুরহাটের পাঁচবিবি ও নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা সংযোগ সড়কের রামকৃষ্ণপুর এলাকার সেতুটি দুই বছর আগে ভেঙে গিয়েছিল মাঝ বরাবর। এরপর আর নির্মাণ করা হয়নি নতুন সেতু।
সেই সেতুর ওপর কাঠের পাটাতন বিছিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে শত শত ছোট যান এবং আশপাশের গ্রামের ৬০-৬৫ হাজার মানুষ।
এতে বিভিন্ন সময় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। নিচে পড়ে আহত হয়েছেন অনেকে, ভেঙে নষ্ট হয়েছে অনেক গাড়ি। তবে নতুন সেতু নির্মাণে নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ।
স্থানীয়রা জানান, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর তার ওপর কাঠের পাটাতন দিয়ে প্রতিদিন মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন ধরনের হালকা যান চলাচল করছে।
জয়পুরহাটে ভাঙা একটি সেতুর ওপর কাঠের পাটাতন বিছিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে যানবাহন ও গ্রামের লোকজন
দুই জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই সংযোগ সড়কের ভাঙা সেতু নিয়ে দৈনন্দিন দুর্ভোগের কথা জানান মাফুল গ্রামের ভ্যানচালক প্রসাদ চন্দ্র। তিনি বলেন, চলাচল করতে গিয়ে এখানে অনেক রিকশা, ভ্যান ও অটোরিকশা উল্টে গেছে। আবার ভারী গাড়িও অনেক সময় জোর করে পার হয়। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
ভ্যানের এক যাত্রী বলেন, ‘এই পথে যেতে খুব ভয় লাগে। অনেক অ্যাক্সিডেন্ট হয়। কয়দিন আগে অটো উল্টে ব্রিজ থেকে নিচে পড়ে গেল। কারও হাত, কারও পা ভেঙেছে।’
রামকৃষ্ণপুরের মিতালি রানী বলেন, ‘জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে এ রাস্তা নওগাঁর ধামুইরহাট গেছে। এ রাস্তার মধ্যে এই ব্রিজটি দুই বছরের বেশি সময় হলো ভেঙে গেছে। আমাদের চলাফেরায় অনেক সমস্যা।’
শুধু যাত্রী নয়, দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই সড়ক ব্যবহারকারী দুটি জেলার কৃষকসহ নানা পেশাজীবী। ভারী যানে কৃষিপণ্য ও অন্যান্য বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন সম্ভব না হওয়ায় বিকল্প পথে ৩০-৩৫ কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ বেশি হওয়ায় বিপাকে রয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
রামকৃষ্ণপুর গ্রামের তাহাজ্জদ হোসেন বলেন, ‘এই ব্রিজ ভাঙার কারণে আমরা কাঁচা মালামাল বাজারে নিয়ে যেতে পারছি না। তাই ঠিকমতো দামও পাচ্ছি না। প্রায় সময় দুর্ঘটনায় গাড়ি ভেঙেচুরে যায়। তাই একটা ব্রিজের খুবই দরকার। কাঠের সাঁকো দিয়ে যাতায়াতে খুবই সমস্যা।
জয়পুরহাটের রামকৃষ্ণপুর এলাকার সেতুটি দুই বছর আগে ভেঙে গিয়েছিল মাঝ বরাবর
জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা রসুলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহেদুল আলম বেনু।
তিনি বলেন, ‘এই পথে প্রতিদিন শত শত যানবাহন ও হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষকে খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
দুর্ভোগ লাঘবে ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষেরও।
জয়পুরহাট এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম জানান, সেতুটি নির্মাণের আগে বিকল্প চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব সেতুটি নির্মাণের চেষ্টা করা হবে।