ফারজানা নূর কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিস বিভাগের শিক্ষার্থী। করোনার মধ্যে কোর্স ওয়ার্ক হিসেবে তিনি একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। চলচ্চিত্রটির নাম আমি যা, আমি তা। চলচ্চিত্রটি ঢাকা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রদর্শিত হবে।
নিউজবাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফারজানা বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ছয় মাস আগে জহির বিশ্বাস স্যার একদিন ক্লাসে এসে বললেন, তার কোর্সের আন্ডারে আমাদের একটি সিনেমা বানাতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সবার মাথা খারাপ হয়ে গেল।
‘করোনার এই সময়ের মধ্যে কীভাবে সিনেমা বানানোর মতো কাজ আমরা করব। তিনি আমাদের উৎসাহ দেয়ার জন্য বললেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইতালির ফিল্মমেকারদের কথা মনে কর। তাদের কাছেও কিছুই ছিল না তখন। কিন্তু সে সময় তারা যে সিনেমাগুলো বানিয়েছিল, সেগুলো আমাদের কাছে এখন নিওরিয়েলিস্ট ফিল্ম। তোমরাও পারবে, চেষ্টা করে দেখ।’
বিভাগের এই উৎসাহ সবসময়ই তাদের কাজের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। ফারজানাও নেমে যান সিনেমা বানানোর কাজে। কী গল্প তিনি বলবেন, সেটা ভাবতে ভাবতে ঘটে মজার ঘটনা। গল্পের পিছনের ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘুরতে গেলাম নানুর বাসায়। তখন হুট করে এক সন্ধ্যায় দেখলাম আমার এক কাজিন ছাদে উঠেছে। সে কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। তাকে বলা হচ্ছে তুমি ছোট মানুষ সন্ধ্যায় ছাদে কী করো? এখনি নামো।’
এ ঘটনা দেখে ফারজানার মাথায় আসে এই বয়সের গল্প বলা তো জরুরি। তিনি বলেন, ‘কৈশোর এমন এক সময় যখন আমাদের যে কোনো সিদ্ধান্তই হেয় করা হয়। কখনও বলা হয় তুমি ছোট, আবার কখনও বলা হয় তুমি বড় হইসো। তোমার কোনো ধরনের আবদার করা মানায় না।’
‘আমি যা, আমি তা’ সিনেমার দৃশ্য।
অদ্ভুত এ বয়সটিকে নিজের সিনেমায় ধরার চিন্তা মাথায় আসে ফারজানার। সে চিন্তা থেকেই কাজ শুরু। নিজেই পরিচালনা এবং সিনেমাটোগ্রাফির কাজ করেন। দুজন বন্ধুর সহায়তায় বাকি কাজ শেষ করেন। নিজে কাজটি করার পরেও তিনি ভাবতে পারেননি, এটি এতো বড় একটি ফেস্টিভালে দেখানো হবে।
এটির পুরো কৃতিত্ব নিজের ইউনিভার্সিটির বিভাগকে দিতে চান ফারজানা। বিভাগ নিয়ে ফারজানা বলেন, ‘আমাদের বিভাগ সবসময় নানা সুযোগের কথা আমাদের জানায়। আমাদেরকে উৎসাহ দেয় যেনো আমরা কাজগুলো করতে থাকি। এমনকি জহির স্যারের ওই কোর্সটির পরে ভালো কাজগুলোকে পুরস্কৃত করা হয় বিভাগ থেকে।’