বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দিহানের বাসায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, কী আছে সিসিটিভি ফুটেজে

  •    
  • ১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১৬:৪২

ওই দিন দিহানের বাসা ও হাসপাতালের পাঁচটি সিসিটিভির ফুটেজ পেয়েছে নিউজবাংলা। এতে মেয়েটির বাসায় ঢোকা এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ের পরিষ্কার চিত্র পাওয়া গেছে।

কলাবাগানে ফারদিন ইফতেখার দিহানের বাসায় যাওয়া কিশোরীর মৃত্যুর আগে-পরে কী ঘটেছিল- তার অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে।

ওই দিন দিহানের বাসা ও হাসপাতালের পাঁচটি সিসিটিভির ফুটেজ পেয়েছে নিউজবাংলা। এতে মেয়েটির বাসায় ঢোকা এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ের পরিষ্কার চিত্র পাওয়া গেছে।

গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে বন্ধু দিহানের বাসায় যাওয়ার পর মেয়েটির মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর আগে শারীরিক সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর মেয়েটির বাবার করা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন দিহান।

দিহানের বাসার উল্টোদিকের একটি ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেদিন দুপুর ১২টার কিছু সময় পর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে একটি ছেলে (যাকে দিহান বলে ধারণা করা হচ্ছে) ও একটি মেয়ে বাসার মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করে সিঁড়ির দিকে চলে যাচ্ছেন।

সিসিটিভি ক্যামেরাটি কিছুটা দূরে থাকায় এই ফুটেজ অনেকটা অস্পষ্ট। এ ছাড়া, ক্যামেরার সামনে একটি গাছের প্রতিবন্ধকতা থাকায় এরপরে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে বাসার পার্কিং এরিয়ার গাড়িতে তোলার দৃশ্যটি ধরা পড়েনি।

তবে মেয়েটি বাসায় ঢোকার প্রায় এক ঘণ্টা পর হাসপাতালগামী দিহানের গাড়ির দৃশ্য পরিষ্কার ধরা পড়েছে ডলফিন গলির মুখের আরেকটি সিসিটিভি ক্যামেরায়।

কলাবাগানের ডলফিন গলিতে হাসপাতালগামী দিহানের গাড়ি

একটি আবাসিক ভবনের ওই সিকিউরিটি ক্যামেরায় দেখা যায়, বেলা ১২টা ৫২ মিনিটে দিহানের টয়োটা এক্সিও গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো গ ২৯-৪৮১৭) বাসার মূল ফটক থেকে বেরিয়ে বাম দিকের রাস্তা ধরে হাসপাতালের উদ্দেশে যাচ্ছে।

গাড়িটি কে চালাচ্ছিলেন বা আরোহীর বিষয়টি এই ফুটেজেও পরিষ্কার। পেছনের জানালার গ্লাস অস্বচ্ছ থাকায় পেছনের সিটে মেয়েটির অবস্থানও নিশ্চিত করা যায়নি।

তবে দিহান ও বাসার দারোয়ান দুলাল হোসেন আদালতে তাদের জবানবন্দিতে বলেছেন, মেয়েটিকে অজ্ঞান অবস্থায় তারা দুজন মিলে গাড়ির পেছনের সিটে তুলেছিলেন। এরপর দিহান একাই গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে যান।

পরের ফুটেজটি আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রবেশমুখের। এতে দেখা যায়, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে হন্তদন্ত হয়ে দিহান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশ করছেন এবং সেখানকার কর্মীদের কিছু একটা বলেছেন।

আদালতে দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী, সে সময় দিহান হাসপাতালের কর্মীদের বলছিলেন, ‘গাড়িতে গুরুতর রোগী আছে। তাকে আনতে সাহায্য লাগবে।’

এরপরই একটি হুইল চেয়ার নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক জন কর্মী বেরিয়ে যান, তার সঙ্গে দিহান ও আরও কয়েক জন কর্মী গাড়ির কাছে যান।

এর দেড় মিনিট পর (১টা ৬ মিনিট) হুইল চেয়ারে করে মেয়েটিকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন দুই কর্মী। পেছন পেছন ছুটে আসেন দিহান। আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আসিরসহ নার্স ও স্টাফরা প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে মেয়েটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, ব্লাড প্রেশার, পালস না পাওয়ায় তাকে সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দেয়া হয়। তবুও হার্ট সচল না হওয়ায় সবশেষ ইসিজি করে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশ্চিত হন মেয়েটি মারা গেছেন। ডেথ সার্টিফিকেট অনুযায়ী, দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

দিহানের ফোন পেয়ে মেয়েটির মা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পৌঁছান দুপুর দেড়টার কিছু সময় পর। এ দৃশ্যও সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এরপর একে একে আসতে থাকেন মেয়েটির অন্যান্য স্বজন।

এর আগে দিহানের তিন বন্ধু হাসপাতালে পৌঁছান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ফোন পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশ আসে দুপুর ২টার দিকে। পুলিশ এসেই দিহান ও তার তিন বন্ধুকে হেফাজতে নেয়। তাদের জরুরি বিভাগের স্টোররুমে রেখে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

২টা ৩৯ মিনিটে হাসপাতালে আসেন মেয়েটির বাবা। মেয়ের মরদেহ দেখে কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। চলতে থাকে বাবা মায়ের আহাজারি।

২টা ৪৭ মিনিটে দিহানকে আটক করে পুলিশ। হাতকড়া পরিয়ে জরুরি বিভাগের স্টোররুম থেকে বের করে দিহানকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিহানের তিন বন্ধুকেও একই সময়ে আটক করতে দেখা যায়।

এর এক ঘণ্টা পর হাসপাতাল ছাড়ে মেয়েটির পরিবার, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

এ বিভাগের আরো খবর