একাধিকবার সময় দিয়েও প্রত্যাবাসন শুরু না করা মিয়ানমার এবার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে নতুন করে আশ্বাস দিয়েছে।
নতুন উদ্যোগে সম্পৃক্ত হচ্ছে চীন; মিয়ানমারের ওপর যাদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
চীনের উদ্যোগে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় এই বৈঠকটি হবে। সেখানেই নির্ধারিত হবে রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমে ফিরে যাওয়ার কৌশল।
আগামী ৮ নভেম্বর মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনের পর প্রথমে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে ও পরে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মন্ত্রী পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে বলে চীনকে চানিয়েছে মিয়ানমার।
বাংলাদেশকে এই বিষয়টি জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হয় ২০১৭ সালের আগস্টে
এতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে চীনা মন্ত্রী ওয়াং ই এর। তিনি জানান, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের শিগগির ফিরিয়ে নেবে বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছে মিয়ানমার।
৮০ দশক থেকেই সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশের আসতে থাকে রোহিঙ্গারা। তবে ২০১৭ সালের আগস্টের অভিযানের পর সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে।
এখন বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে গড়ে উঠেছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।
- আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘর্ষের নেপথ্যে কী
প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিও করেছে মিয়ানমার। কিন্তু বারবার সময় নিয়েও প্রত্যাবাসন শুরু কররেনি দেশটি।
একাধিকবার প্রত্যাবাসন ভেস্তে গেছে নিরাপত্তা ইস্যুতে রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায়।
মিয়ানমারের এই টালবাহানা নিয়ে একাধিকবার বিরক্তিও প্রকাশ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোরিও গুতেরেসও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিজ চোখে দেখে গেছেন। এ বিষয়ে মিয়ানমারকে চাপ দেয়ার কথা বলে গেছেন গুতেরেসও।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার দেশ রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমার শিগগির বাংলাদেশের সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু করবে।
- আরও পড়ুন: রাখাইনদের ওপর নিপীড়ন বন্ধে সমাবেশ
প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ঢাকায় প্রস্তুতিমূলক সিনিয়র কর্মকর্তা পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক দ্রুত শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ওয়াং ই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চীন। করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
করোনা মহামারির কারণে চীনের যেসব প্রকল্প স্থগিত বা ধীরগতি হয়েছে সেগুলোর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই শেষ করা হবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
চীনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকদের ভিসা নবায়নের বিষয়েও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান ড. মোমেন।
এ বিষয়ে ওয়াং ই জানান, বিদেশি শিক্ষার্থীদের চীনে প্রবেশের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। হলে বাংলাদেশিদের অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা হবে।