বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তিন মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, নেতারা বলালেন বজ্রপাত

  •    
  • ১৮ জুন, ২০২১ ১৯:১২

‘এলাকার নেতা দিয়া আমাগো জোর কইরা বলাইছে, তোরা বল বজ্রপাতে মরছে। তোরা আমাগো কথা শুনলে তোগো আমরা দেখমু। এর লাইগা মামলা করা হয় নাই। থানায় সাইন দেওয়াইছে বজ্রপাতে মরছে কইয়া। বাড়িয়ালির বাসায় গেছি। সে বলে কী, যদি রাস্তাঘাটে এক্সিডেন্ট হইয়া মইরা যাইত! এইডা কী কতা?’

রাজধানীতে একটি বস্তির ফটক বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হলেও সেটি বজ্রপাতের কারণে হয়েছে বলে চাপ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর চাপের মুখে তিনটি পরিবারই থানায় গিয়ে লিখিত দিয়ে এসেছে যে তাদের মৃত্যু হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগে।

তিনটি পরিবারের সঙ্গেই কথা হয়েছে নিউজবাংলার। তারা জানান, তাদের তিনটি কথা বলা হয়েছে এই লিখিত দিতে। প্রথমত, মামলা করে কোনো লাভ হবে না, বিচার পাবে না; দ্বিতীয়ত, মামলা করলে মরদেহ কাটাছেঁড়া করা হবে; তৃতীয়ত, তাদের কথা শুনলে পরে দেখা হবে।

এই পরিবারগুলো থানায় যাওয়ার পর পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা না করেই লিখিত নিয়েছে।

আবার একজন শুরুতে শিখিয়ে দেয়া কথা বলতে অস্বীকার করলে থানাতেই তাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হয়।

যারা বজ্রপাত বলতে বাধ্য হয়েছেন, তারা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। তবে তারা কারা, সেটি বলতে পারেননি।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর বিষয়টি প্রমাণ হলে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা যায় বলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে।

গত ৫ জুন মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার সোনামিয়া গলিতে একটি বস্তিতে ১০ বছর বয়সী সাবিনা আক্তার পাখি, ১২ বছর বয়সী ঝুমুর আক্তার ঝুমা ও ৬৫ বছর বয়সী আব্দুল হকের মৃত্যু হয়।

বস্তিবাসী জানালেন, গেটের পাশে বিদ্যুতের একটি খুঁটি। সেখানে বিদ্যুতের তারগুলো ছিল দুর্বল। বাতাস এলে তার লোহার ফটক ও টিনের চালে প্রায়ই বাড়ি খায়। এর আগেও কয়েকবার ঝড়-বৃষ্টিতে এ ঘটনা ঘটেছে।

সেদিন প্রাণ হারানো নয় বছরের শিশু ঝুমুর আক্তার ঝুমার মা ময়না বেগম ঘটনার যে বর্ণনা দেন, তা হলো ‘যহন আমার মাইয়া গেট ধরছে, তহন বইয়া পইড়া এক্কেবারে জবান বন্ধ হইয়া গ্যাছে গা। আরেকটা যে বাচ্চা মরছে ঢাকা মেডিক্যালে, হ্যায় আমার মাইয়ারে কইছে ঢং করোস। কইয়া একটা লাত্থি মারছে। লগে লগে যাইয়া আমার মাইয়ার উপরে পড়ছে। আবার হ্যারে আবার বাঁচাইতে আসছে যে বুইড়া কাকা, হ্যারো বাঁচাইতে গিয়ে হ্যায়ও তাগো উপড়ে পইড়া রইছে।’

তিনজনের মৃত্যু, তবু কোনো মামলা হয়নি। ভুক্তভোগীরাও এ বিষয়ে উদ্যোগ নেননি, আর পুলিশও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়নি।

কী বলছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো

নিহতদের স্বজনেরা বলছেন, তাদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে থানায় নিয়ে বলানো হয়েছে এটা বজ্রপাতে মৃত্যু। তবে বিদ্যুতায়িত হয়ে এই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও একটি বিষয় কাজে লাগানো হয়েছে। স্বজনদের বলা হয়েছে, মামলা হলে ময়নাতদন্ত হবে আর মরদেহ কাটাছেঁড়া করা হবে। আর সেটাতে রাজি ছিলেন না অভিভাবকরা।

পুলিশ বলছে, মৃতদের স্বজনরা থানায় এসে লিখিত বক্তব্য দিয়েছে যে, বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে এবং তারা মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে চান না।

সেদিন মারা যাওয়া আব্দুল হকের তিন মেয়ে ও ছোট একটা ছেলে রয়েছে। তিনি ছিলেন বাসার দারোয়ান।

তার মেয়ে কোহিনূর বেগম রাজি ছিলেন না এই ভাষ্য দিতে।

দুর্ঘটনার দিন আশেপাশের মানুষ ভিড় করে বস্তিতে। তবে যাননি বাড়িওয়ালি

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার আব্বায় মইরা গেছে। আমারে থানায় লইয়া গেছে। আমারে ডর দেহাইয়া কয় তোমার আব্বারে কাইট্টা ছিঁড়া ফালাইব। আমার আব্বায় মইরা গেছে, ওহন আমি কমু যে বজ্রপাতে মইরা গেছে? প্রথমে থানার মধ্যে কইয়ালাইছি কারেন্টে মরছে। পরে আমারে টাইনা-হ্যাসরাইয়া নিয়া আইছে।’

অভিযোগ আছে এলাকার স্থানীয় ‘নেতাদের’ দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের দিয়ে থানায় মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

কোহিনূর বলেন, ‘এলাকার নেতা দিয়া আমাগো জোর কইরা বলাইছে, তোরা বল বজ্রপাতে মরছে। তোরা আমাগো কথা শুনলে তোগো আমরা দেখমু। এর লাইগা মামলা করা হয় নাই। থানায় সাইন দেওয়াইছে বজ্রপাতে মরছে কইয়া।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কাইলকা (১১ জুন) বাড়িয়ালির বাসায় গেছি। সে বলে কী, যদি রাস্তাঘাটে এক্সিডেন্ট হইয়া মইরা যাইত! এইডা কী কতা?’

কথা হয় মৃত ঝুমুর আক্তার ঝুমার মা ময়না বেগমের সঙ্গেও।

থানায় ভুল বুঝিয়ে বক্তব্য দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হ্যারা কইছে ক্যাচাল করলে তো আর মাইয়া পাইতি না। ভক্কোর-চক্কোর কত কথা। তহন আমার হুঁশ আছিল না। তাই সবার নাম চেহারা মনে নাই। তয় আমার লগে সেলিম, আলতাফ গেছিল, তাই ওগো নাম মনে আছে। হ্যারা না করে যেন আমরা কাউরে এই কথা না কই। এই এলাকার মতো এলাকা আমি আর দেহি নাই। এলাকা ভরা ন্যাতা। গরিবের বিচার নাই।’

হাতিরঝিল থানায় গিয়ে বস্তিবাসী লিখিত দিতে বাধ্য হন যে, সেই তিন মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে

সাবিনা আক্তার পাখির মা কুলসুম বেগম বলেন, ‘পাখিরে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়ি কবর দিছি। হ্যারা (মালিকের লোক) কইছে আমার মাইয়া বজ্রপাতে মইরা গেছে। তহন আমার হুঁশ-জ্ঞান কিচ্ছুই ছিল না। তহন আমারে কয় তোমার থানায় যাইতে হইব। তোমার মাইয়ারে মর্গে নিছে। কাইট্টা ছিঁড়া রাইখ্যা দিবো। থানায় গিয়া বজ্রপাতে মরছে কইলে তোমার মাইয়ারে কাটা-ছিঁড়া করব না।’

তিনি বলেন, ‘এলাকার নেতা-গোতারা কইছে কেস মামলা করলে কী হইব? কিছুই হইব না। তোমরা কইবা বজ্রপাতে মইরা গ্যাছে। এর পরে যা করন লাগে আমরা করমুনে।’

শিখিয়ে দেয়া কথা বলে আসলেও নিজের ভাষ্য নিজেই বিশ্বাস করেন না কুলসুম। তিনি বলেন, ‘এই বাসার কেউ কইতাছে না, বজ্রপাতে মারা গেছে। হ্যারা তিনজন কারেন্টে মরছে। বজ্রপাতে তিনজন মরব ক্যামনে? হ্যারা তো একলগে আছিল না। একজনরে ধরতে গিয়ে আরেকজন মরছে। আর ওই দিন এইহানে এমন কোনো বজ্রপাত হয় নাই।

‘বজ্রপাতে মরলে শুধু আমার মাইয়াডাই মরত। আমার মেয়ে আগে গেছে। আমার বুকটাই খালি হইত। বাকি দুইজন মরত না।

‘বজ্রপাত কি তিনবার পড়ছে? ওইহানে বজ্রপাতের চিহ্ন থাকত না? তিনবার বজ্রপাতে বাড়িডা বাড়ি থাকত?’

কী বলছে পুলিশ

নিহতদের স্বজনদের এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কে বলেছে এই কথা? এটা সত্য না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। ওরা থানায় লিখিত দিয়ে গেছে।’

কী লিখিত দিয়ে গেছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওরা লিখিত দিয়ে গেছে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। তারা কোনো পোস্টমর্টেম করবে না।’

নিহতের পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে হুমকি দিয়ে মামলা করতে দেয়া হয়নি- এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে ওসি বলেন, ‘আপনি অভিযোগ পাইছেন সেটা আপনার ব্যাপার। তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা আছে আমাদের কাছে। ওকে।’

বস্তিটির মালিক মারা গেছেন। তার ছেলে মাহফুজ আনাম মাসুদও কোনো ভয়ভীতি দেখানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটার পরে অনেক কথাই উঠবে। এত বড় ঘটনায় আমরা এমনিতেই পেরেশান।’

যেভাবে ঘটেছিল সেই মর্মান্তিক ঘটনা

ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঝুমার মা ময়না বেগম বলেন, ‘আমার মাইয়া খ্যালতাছিল। এই গেইট আগেই আরথিন (বিদ্যুতায়িত বুঝিয়েছেন) হইছে। সব পোলাপাইন ধরছে, হাতটা খালি ঝিন ঝিন করছে। ওই ঘরের ছেলেডা কইছে ঝুমা গেট ধরিস না, আরথিন হইছে। ওয় কয় খালু আমার সাহস আছে। এই কথা কইয়া গেট ধরা মাত্তর গেটের এই পাশের থেইকা ধইরা ওই পাশে লইয়া গেছে। ওই পাশে নিয়া আমার মাইয়ারে ফালায় নাই। ধইরাই রাখছে।

বস্তির বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে এই খুঁটি থেকে। সেটি যে দুর্বল ছিল, তা খালি চোখেই বোঝা যায়

‘ছোট মাইয়াডা পাখি যাইয়া কইতাছে, কিরে ঝুমা ঢং করোস? এই কথা কইয়া পানিতে পাড়া দেওনের লগে লগে মাইয়াডা পইড়া গেছে। বুড়া চাচায় ওগো বাঁচাইতে আইসা টান টান হইয়া শুইয়া পড়ছে।’

ময়না বেগম পোশাকশ্রমিক। ঝুমাও কাজ করত কারখানায়। তবে সেদিন অফিস বন্ধ থাকায় সে কাজে যায়নি।

ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিস যা বলছে

ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার (খিলগাঁও) মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই বডি তিনটা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। একটা মেয়ে প্রথমে বিদ্যুতায়িত হয়। তাকে ধরতে গিয়ে আরও দুজন আক্রান্ত হয়। বজ্রপাতের কারণেও বিদ্যুতায়িত হতে পারে। এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’

মেরামত হয়েছে বিদ্যুতের সেই সংযোগ

ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত ১২ জুন বিদ্যুতের সেই দুর্বল সংযোগ মেরামত হয়েছে। বাড়িওয়ালার ছেলে নিজে উপস্থিত থেকে কাজ চলার সময় সেখানে ছিল নিউজবাংলাও।

বস্তির সামনেই একটি খুঁটি থেকে নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ-সংযোগ। সেই সংযোগটির তার অনেকটাই নড়বড়ে। ঝোড়ো হাওয়ায় এই তার প্রায়ই বাড়ি খেত লোহার ফটক আর টিনের চালে। তখন বিদ্যুতায়িত হয়ে যেত সেগুলো।

দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত ১২ জুন বাড়ির মালিকের ছেলে উপস্থিত থেকে সংযোগ মেরামত করান

ওই এলাকায় খুঁটিগুলো থেকে এলোমেলোভাবে নেয়া হয়েছে বিদ্যুতের তার। খালি চোখেই বোঝা যায়, সেগুলো বিপজ্জনক।

মেইন সুইচ বস্তিতে নয়, পাশের বাসায়

পাশাপাশি দুটি টিনশেড বস্তি থাকায় পাশের বাসা থেকে লাইন টানা হয়েছে। বাসার মেইন সুইচ পাশের বাসায়।

নিহতদের পরিবার বলছে, এই বাসায় যদি মেইন সুইচ থাকত, তবে সেটা বন্ধ করে তাদের বাঁচানো সম্ভব হতো।

এই বাড়ির মালিক মারা গেছেন আগেই। বস্তি দুটি ম্যানেজারের মাধ্যমে দেখভাল করেন তার স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে তিনি দুই বস্তিতে যাননি বলে আছে ক্ষোভ। তবে তার ছেলে বলছেন, তার মা অসুস্থ।

তবে ঝুমার মা ময়না বেগম বলেন, ‘ওনার ছেলে তো বলবেই অসুস্থ। সে টাকাওয়ালা মানুষ। আমরা গরিব মানুষ, একজনের কিছু হইলে আমরা দৌড়াইয়া যাই।

দুই বস্তির মেইন সুইচ সেখানে নেই। বস্তিবাসী বলছেন, এটি সেখান থাকলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে তিন জনকে বাঁচানো যেত

‘তিনি যতই অসুস্থ হোক, তার বস্তির তিনডা মানুষ মাইরা গ্যাছে। আমার মাইয়ারে এলাকার মানুষ রাস্তার এই মাথা থেইকা ওই মাথা পর্যন্ত সিরিয়াল ধইরা দেখতে আইছে। ওই যে দেহন যায় বাসা। আর সে একবার দ্যাখতে আইতে পারে নাই।’

বজ্রপাত নিয়ে যে দাবি মালিকের ছেলের

বাড়িওয়ালার ছেলে মাহফুজ আনাম মাসুদের দাবি, বজ্রপাত হয়েছে টেলিভিশনের ডিশ সংযোগের তারে। আর সেই তার লাগানো ছিল বস্তির গেটে। আর ডিশের সেই তারের মাধ্যমে বিদ্যুতায়িত হয়েছে সবাই।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওইখানে ছিল ডিশের লাইন। ডিশের লাইনের তার ছিল টিনের সঙ্গে লাগানো। ঠাডা (বজ্রপাত) পড়ছে ডিশের লাইনে। ওখানে লোক ছিল, তাই একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেছে।’

বিদ্যুতের লাইনে যদি সমস্যা না থাকবে, তাহলে মেরামত করেছেন কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরে এই বাসায় ৫ দিন বিদ্যুৎ ছিল না। এই দেখেন তারে কিছু হয় নাই। সরকারি লোক বলছে লাইন চেঞ্জ করতে হবে। তারের কিছু না হলেও আমি নতুন করে আবার তার চেঞ্জ করে দিছি। আজকে সব কাজ শেষ করলাম।’

স্থানীয়রা বলছেন, কেবল ওই দুটি বস্তিতে নয়, সেই এলাকার অন্য বস্তিগুলোতেও বিদ্যুৎ সংযোগ দুর্বল

ডিশের তারে বজ্রপাত হলে তা নিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এসে তো দেখছে। ইলেকট্রিশিয়ান দেখাইছি। কারেন্টে শর্ট এ রকম কিছু হয় না। বাজ যখন পড়ে, তখন তো কারেন্টে এমনেতেই টানে। বজ্র গেটের ওইখানে পড়ছে। আমি ছিলাম না, শোনা কথা। একজন ওইখানে আটকাইয়া গেছে। মুরব্বি ওই বাচ্চাকে ছুটাইতে গেছে। মুরব্বিকে ধরতে গেছে আরেকজন। এইভাবে তিনজনের মৃত্যু হয়।’

তাহলে তো তারা বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন- এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, না ভাইয়া আপনার বুঝতে হবে। (বজ্রপাত) তার হয়ে গেটে পড়ছে। তার পরে ওখানে ডিশের তারগুলো ছিল। বজ্রপাতে এমনিতেও ভোল্টেজ বেড়ে যায়।’

তড়িৎ প্রকৌশলী যা বলছেন

পুরো ঘটনা শুনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম হারুন উর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বজ্রপাত যেকোনো জিনিসের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। সেটি টেলিফোনের তারও হতে পারে। তবে সেটি হয় খুবই অল্প সময়ের জন্য। এক সেকেন্ড বা এ রকম সময়ের জন্য।

‘তবে তিনজন একসঙ্গে মারা যাওয়াটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। একজন আরেকজনকে সেভ করতে গিয়ে মারা গেলে সেটি অন্য ব্যাপার। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা যেতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর