ডোনাল্ড ট্রাম্প কি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিততে পারেন? তার সম্মানজনক এই পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা কতটা? গত কয়েকদিন ধরে এসব প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন মহলে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। তার সমর্থকরাও মনে করছেন, তিনি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য হয়ে উঠেছেন। তবে সমালোচকরা তার বিতর্কিত নীতি ও কর্মকাণ্ডকে এ বিষয়ে ব্যর্থতা হিসেবেই দেখছেন।
ট্রাম্পের সময়ের দুটি প্রধান সংকট হলো গাজা ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। বর্তমানে উভয় ক্ষেত্রেই শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো, ট্রাম্প ও তার দল আসলেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে কি না। যদি তারা সফল হন, তবে নোবেল কমিটি অবশ্যই এটি স্বীকৃতি দিয়ে ট্রাম্পকে পুরস্কার দিতে পারে।
ইউক্রেনে সম্ভাব্য চুক্তি
ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় নেতাদের কয়েক দফায় বৈঠকের পর চুক্তির রূপরেখা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে।
এর সম্ভাব্য প্রধান দুটি বিষয় হলো: যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মিত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, যা ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য ও ভবিষ্যতের আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দেবে। আর পূর্ব ইউক্রেনের বর্তমান সীমান্তে কিছু ভূমি বিনিময়, যা স্থিতিশীল সীমান্ত ও দীর্ঘমেয়াদি শান্তির শর্ত তৈরি করবে।
এ লক্ষ্যে ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে সামরিক সরঞ্জাম ও দীর্ঘ-পরিসরের ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ, এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বজায় রাখা প্রয়োজন। সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় ট্রাম্প এই কৌশলকে সমর্থনও করেছেন।
গাজা যুদ্ধের সমাধান
ট্রাম্প প্রশাসন গাজা যুদ্ধের জন্য এরই মধ্যে ২০ পয়েন্টের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। এতে ইসরায়েল গাজা পুনর্দখল বা অধিগ্রহণের পরিকল্পনা বাতিল করেছে এবং হামাসকে গাজার নিয়ন্ত্রণ ত্যাগ ও সব বন্দি মুক্ত করতে বলা হয়েছে।
সৌদি আরব, কাতার, মিসর, জর্ডান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো রাষ্ট্রগুলো এতে শর্তসাপেক্ষে সমর্থন দিয়েছে।
এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে গাজা হামাসের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবে এবং আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় নিরাপত্তা পুনঃস্থাপন ও নতুন প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি হবে। ইসরায়েলকেও পুনর্দখল বা পুনর্বাসনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে।
ট্রাম্পের পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা
প্রতি বছর ১০ অক্টোবর নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ, আর বাকি মাত্র তিনদিন। ট্রাম্প হয়তো আশা করছেন, তিনি এবারই পুরস্কার জিতবেন।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সেই সম্ভাবনা খুব একটা নেই। তবে ২০২৬ সালে পুরস্কারের ১২৫তম বর্ষে ট্রাম্পের প্রচেষ্টা নোবেল কমিটির কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হতে পারে। গাজা ও ইউক্রেনের যুদ্ধ দুটির সমাধান করতে পারলে ট্রাম্পের দাবি অবশ্যই শক্তিশালী হবে।