নেপালে জেন জি আন্দোলন দমাতে ‘লেথাল উইপন’ ব্যবহার করে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছিল পুলিশ। এর প্রমাণ মিলেছে পুলিশের প্রাথমিক প্রতিবেদনে। নেপাল পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, ওই ২ দিনে ২ হাজার রাউন্ডের বেশি তাজা গুলি ছোড়ে পুলিশ, যার বেশিরভাগই আসে প্রাণঘাতী অস্ত্র বা ‘লেথাল উইপন’ থেকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে মোট ১৩ হাজার ১৮২ বার গুলি ছোড়া হয়েছে। এসব গুলির মধ্যে বেশিরভাগই এসেছে ‘লেথাল উইপন’ থেকে, যার মধ্যে ছিল ইনসাস রাইফেল, এসএলআর এবং পিস্তল। ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিহতদের বেশিরভাগের মৃত্যু হয়েছে উচ্চ গতির গুলির আঘাতে।
পুলিশের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওই দুই দিনে ২ হাজার ৬৪২ রাউন্ড তাজা গুলি ছোড়া হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৮৮৪টি রাবার বুলেট, ২ হাজার ৩৭৭টি সতর্কতামূলক গুলি এবং ৬ হাজার ২৭৯টি টিয়ারগ্যাস শেল ব্যবহার করা হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি গুলি চালানো হয়েছে কাঠমাণ্ডুতে। কেবল এই অঞ্চলে ১ হাজার ৩২৯টি লাইভ বুলেট, ১ হাজার ৪২০টি রাবার বুলেট ও ১ হাজার ৪৬টি সতর্কতামূলক গুলি ছোড়া হয়। পাশাপাশি ৩ হাজার ৯৬টি টিয়ারগ্যাস শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে উপত্যকায় ৬ হাজার ৮৯১ বার গুলি চালানো হয়েছে।
এর বাইরে মধেশ প্রদেশে ১ হাজার ৯২১ বার, কোশীতে ১ হাজার ৫৬৮, কর্ণালীতে ৯৩২, সুদূরপশ্চিমে ৭৬৩, লুম্বিনীতে ৬১৯, গণ্ডকীতে ৩০৬ এবং বাগমতীর অন্যান্য জেলায় ১৮১ বার গুলি চালানো হয়েছে।
নেপাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এটি কেবল পুলিশের প্রাথমিক রেকর্ড। পরবর্তীতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র বিনোদ ঘিমিরে জানান, কত রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে এবং কতগুলো হারিয়ে গেছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল দীপক রেগমির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে, যেখানে বিভিন্ন প্রদেশের কর্মকর্তারা যুক্ত রয়েছেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রানি-পোখরীর ভ্যালি পুলিশ অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে অস্ত্র ও গুলির রেকর্ডও নষ্ট হয়েছে। কমিটির এক সদস্য বলেন, তাই আমরা সদর দপ্তরের ডেটার সঙ্গে মিলিয়ে যাচাই করছি।