শ্রীলঙ্কার তিন সাবেক প্রেসিডেন্ট রোববার কারাবন্দী সাবেক নেতা রনিল বিক্রমাসিংহের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন এবং তার কারাবাসকে গণতন্ত্রের ওপর ‘পরিকল্পিত আক্রমণ’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন। কলম্বো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
জুলাই ২০২২ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকা বিক্রমাসিংহের সাবেক রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এই তিন জন বলেছেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অমূলক।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে হাভানায় জি৭৭ শীর্ষ সম্মেলন এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষে দেশে ফেরার সময় ব্রিটেনে যাত্রাবিরতির জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিলের ৫৫ হাজার ডলার ব্যয় করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
৭৬ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহকে রিমান্ডে নেওয়ার একদিন পর শনিবার তাকে কলম্বোর প্রধান রাষ্ট্রীয় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তিনি তীব্র ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি তীব্র পানিশূন্যতায় ভুগছেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা যা দেখছি, তা আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মূল বিষয়গুলোর ওপর একটি পরিকল্পিত আক্রমণ।’
৮০ বছর বয়সী কুমারাতুঙ্গা বলেছেন, বিক্রমাসিংহের কারাদণ্ডের পরিণতি সমস্ত নাগরিকের অধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে।
কুমারাতুঙ্গা আরও বলেন, ‘আমি এই উদ্যোগগুলোর বিরুদ্ধে আমার অকপট বিরোধিতা প্রকাশ করছি, যা প্রতিরোধ করা সমস্ত রাজনৈতিক নেতার কর্তব্য।’
তার উত্তরসূরী ৭৯ বছর বয়সী মাহিন্দা রাজাপাকসে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করার কিছুক্ষণ আগে বিক্রমাসিংহের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং শনিবার তাকে কারাগারে দেখতে যান।
৭৩ বছর বয়সী মৈত্রীপালা সিরিসেনা এই কারাবাসকে ডাইনি শিকার (উইচ হান্ট) আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি ২০১৮ সালের অক্টোবরে বিক্রমাসিংহকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করেছিলেন এবং ৫২ দিন পরে সুপ্রিম কোর্ট তাকে পুনর্বহাল করতে বাধ্য করেছিলেন।
বিক্রমাসিংহের নিজস্ব ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) শনিবার জানিয়েছে, তারা বিশ্বাস করে যে, তিনি আবারও ফিরে আসতে পারেন- এই ভয়ে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি অনুরা কুমারা দিশানায়েকের কাছে হেরে যান। কিন্তু কোনও নির্বাচিত পদ না থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় রয়েছেন।
২০২২ সালে দ্বীপরাষ্ট্রটির সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বেরিয়ে আসা দিশানায়েকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে বিক্রমাসিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কয়েক মাস ধরে চলা রাজপথের বিক্ষোভের পর তৎকালীন নেতা গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করার পর ২০২২ সালের জুলাই মাসে বিক্রমাসিংহ প্রেসিডেন্ট হন।