ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করায় এর চাপ পড়বে দুই দেশের ওপরই। আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এমন সিদ্ধান্তে উভয় দেশের ফ্লাইট পরিচালনায় জ্বালানি ব্যয়, ট্রানজিট খরচ ও অপারেটিং খরচ বহুগুণ বেড়ে যাবে।
ওয়াশিংটন থেকে সিনহুয়া আজ এই খবর জানায়।
গত ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে টানাপোরেন চলছে। ওই হামলায় পাকিস্তানের মদদের অভিযোগ আনে ভারত। আর তা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের মধ্যেও গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
পাল্টাপাল্টি বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যেই ভারতের বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান। এই পদক্ষেপের এক সপ্তাহের মাথায় পাকিস্তানের জন্যও একই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত।
সম্প্রতি ভারত সরকারের এক নোটিশে বলা হয়েছে, ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত পাকিস্তানি বিমানের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। কিন্তু পাকিস্তান-ভারতের পাল্টাপাল্টি আকাশসীমা বন্ধে কার কী ক্ষতি হবে? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়ার কারণে শত শত ভারতীয় ফ্লাইট চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে ভারতীয় এয়ারলাইনসের ফ্লাইট পরিচালনায় জ্বালানি এবং ট্রানজিট খরচ উভয়ই বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে লম্বা পথের ফ্লাইটগুলোকে জ্বালানি নিতে মাঝপথে থামতে হবে, যা ফ্লাইট পরিচালনার খরচ আরো বাড়িয়ে দেবে।
এই অবস্থা চলতে থাকলে, ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৭৭ কোটি রুপি বাড়তি খরচ করতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতি মাসে তা ছাড়াতে পারে ৩০৭ কোটি রুপি। আর ফ্লাইট প্রতি অতিরিক্ত খরচ হতে পারে ১ হাজার ৩৫০ থেকে ৩ হাজার ডলার। অবশ্য এমন সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের নিজের হাতছাড়া হচ্ছে ওভারফ্লাইট ফি।
একইভাবে ফ্লাইট পরিচালনায় বাড়তি সময় ও অপারেটিং খরচ বাড়ায় ভুগবে পাকিস্তানও। কারণ, একটি এয়ারলাইন্সের মোট খরচের প্রায় ৩০ শতাংশ ব্যয় করতে হয় বিমানের জ্বালানিতে। তবে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ভারতের তুলনায় পাকিস্তানের বিমান শিল্পে কম পড়বে। কারণ, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স, পিআইএ শুধুমাত্র কুয়ালালামপুর রুটে ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার করে। যেখানে প্রতিদিন ২শ’ থেকে ৩শ’ ভারতীয় ফ্লাইট পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে।