যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে একজন বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত শুক্রবার কোকোনিনো কাউন্টি হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস এই তথ্য জানিয়েছে। ২০০৭ সালের পর ওই কাউন্টিতে এটিই প্লেগে কারও মৃত্যুর প্রথম ঘটনা।
সতর্কতা অবলম্বন ও যথাযথ চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে প্লেগ এখন আর আগের মতো মারণব্যাধি না হলেও, বিচ্ছিন্ন এ ধরনের ঘটনা জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে মৃত ব্যক্তি একটি মৃত প্রাণীর সংস্পর্শে এসে প্লেগে সংক্রমিত হয়েছিলেন।
চতুর্দশ শতকে ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে পরিচিত এই রোগে ইউরোপের প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। যদিও বর্তমানে এটি মানুষের মধ্যে খুবই বিরল ও অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে প্লেগের সফলভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) জানায়, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতি বছর গড়ে সাতজনের প্লেগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা যায়। এদিকে কোকোনিনো কাউন্টি প্রশাসন জানিয়েছে, একজন মারা গেলেও জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম।
এক বিবৃতিতে কোকোনিনো কাউন্টি বোর্ড অব সুপারভাইজারসের চেয়ার প্যাট্রিস হোর্স্টম্যান বলেন, আমাদের হৃদয় মৃত ব্যক্তির পরিবার ও স্বজনদের জন্য ভারাক্রান্ত। এই কঠিন সময়ে আমরা তাদের কথা মনে রাখছি। পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ বিষয়ে অতিরিক্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হবে না।
প্লেগের বিভিন্ন ধরন রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হলো- বুবনিক প্লেগ, যা মূলত প্লেগবাহি পোকামাকড়- বিশেষত সংক্রমিত মাছি দ্বারা মানুষের দেহে প্রবেশ করে। তবে সবচেয়ে গুরুতর ধরনটি হলো নিউমোনিক প্লেগ, যা সাধারণত অপরিণামদর্শী বিউবনিক প্লেগ ফুসফুসে ছড়ালে হয়। এটি খুবই মারাত্মক ও বিরল।
নিউমোনিক প্লেগ মূলত ‘ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস’ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট ফুসফুসের একটি মারাত্মক সংক্রমণ।
বুবনিক প্লেগে আক্রান্ত হলে সাধারণত সংক্রমণের ২ থেকে ৮ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি জ্বর, কাঁপুনি, মাথাব্যথা, দুর্বলতা ও লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ অনুভব করতে পারেন।
প্লেগ প্রতিরোধে যেসব সতর্কতা নেওয়া যায়, তার মধ্যে রয়েছে:
১. ডিইইটিসমৃদ্ধ স্প্রে ব্যবহার করে পোকা-মাকড়ের কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া।
২. মৃত প্রাণী, সংক্রমিত টিস্যু বা কাপড়ের সংস্পর্শ এড়ানো।
৩. লক্ষণযুক্ত রোগীর কাছাকাছি না যাওয়া।
৪. যেখানে সম্প্রতি প্লেগ সংক্রমণ হয়েছে, এমন এলাকা এড়িয়ে চলা।