অস্ট্রেলিয়ার বিমানবন্দরে স্ত্রী ও বাবাকে জড়িয়ে ধরে আবেগতাড়িত হলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। অশ্রুভেজা চোখে তাকালেন প্রিয় জন্মভূমিতে। বুঝলেন, সেখানকার মানুষ তাকে আগের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন। তাদের ভালোবাসায় তিনি বুধবার ফিরে গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়।
অ্যাসাঞ্জের এই মুক্তিতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রকে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘অ্যাসাঞ্জকে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি খুব খুশি।’
অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ার বিমানবন্দরে পা রাখার পর সেখানে আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হয়। একদল সমর্থক আনন্দে উল্লাস করতে থাকেন। এভাবেই নিজের দেশে ফিরলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। তার এই আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দর এলাকা ছিল লোকারণ্য। তাদের মধ্যে ভক্ত-সমর্থকের পাশাপাশি ছিলেন বিপুলসংখ্যক সংবাদকর্মী।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্দার্ন মেরিয়ানা আইল্যান্ডসের আদালতে এক মামলায় দোষ স্বীকার করে নেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। এতে এক বছর মেয়াদি এই মামলাটির ইতি ঘটে।
সামরিক গোপন তথ্য উইকিলিকসের মাধ্যমে ফাঁস করে দেয়ায় জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানান দেশটির প্রসিকিউটররা। কিন্তু তাকে ফেরত পাঠানো হলে উচ্চ নিরাপত্তা সম্বলিত কারাগারে তাকে দীর্ঘ কারাভোগ করতে হবে বলে আতঙ্ক ছিল।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। এতে তিনি দোষ স্বীকার করে নেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির বলে তার মুক্তির পথ উন্মুক্ত হয়। ফলে পাঁচ বছর জেল খাটার পর তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়ার চেয়ে নতুন করে মুক্ত জীবন পান।
ব্রিটেনের বেলমার্শ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় তিনি স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। সেখান থেকে সোজা উড়ে যান থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে। সেখানে তার ব্যক্তিগত জেট বিমানে জ্বালানি নেয়া হয়। ব্যাংকক থেকে সোজা পূর্ব দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান মেরিয়ানা আইল্যান্ডসে বুধবার সকালে গিয়ে উপস্থিত হন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে অভিযোগ স্বীকার করে নেন তিনি। অতঃপর জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে বহনকারী বিমান বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩৭ মিনিটে অবতরণ করে অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায়।