ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাসের পক্ষে যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
বুধবার হামাসের যুদ্ধবিরতির দাবি প্রত্যাখ্যান করে গাজার দক্ষিণে রাফাহ শহরে সৈন্যদের অগ্রসর হওয়ার প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছেন, কয়েক মাসের মধ্যেই বিজয় আসন্ন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে এক বৈঠকের পর নেতানিয়াহু এক প্রেস কনফারেন্সে এসব কথা বলেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নেতানিয়াহু বলেন, আলোচনায় কিছু হচ্ছে না। তাদের (হামাস) শর্তগুলো উদ্ভট। সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত বিজয় ছাড়া অন্য কোনো সমাধান নেই। হামাস যদি গাজায় টিকে থাকে, তবে পরবর্তী গণহত্যা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেছেন, নেতানিয়াহুর মন্তব্য রাজনৈতিক সাহসিকতার একটি রূপ। এর মাধ্যমে বোঝা যায় তিনি এই অঞ্চলে সংঘাত চালিয়ে যেতে চান।
এর আগে গাজায় ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে বিরতি টানতে একটি প্রস্তাব দেয় হামাস, যাতে সংঘাত সাড়ে চার মাস বন্ধের পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে।
ওই প্রস্তাবের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বুধবার জানায়, যুদ্ধবিরতির সময়ে হামাসের হাতে বন্দি সব ইসরায়েলিকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেয়া হবে। এর বিনিময়ে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে ইসরায়েল এবং যুদ্ধ বন্ধে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে গত সপ্তাহে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের দেয়া প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে হামাস তাদের পরিকল্পনার কথা জানায়, যা আশা ও স্বস্তির সঞ্চার করে উপত্যকায়।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় দেশটি।
এ অবস্থায় গাজায় জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি ও ইরসায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ও গাজায় মানবিক সহায়তায় পাঠানোর শর্তে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
এরপর এই যুদ্ধবিরতি চলে সাত দিন। এই সাত দিনে হামাস ১১০ জনকে এবং ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে। তবে আন্তর্জাতিক নানা মহলের চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি।
হামলার সময় প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ইসরায়েল বলছে, গাজায় এখনো অনেক জিম্মি রয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েল নির্বিচারে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে গাজায় প্রায় ২৮ হাজার জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। এদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।