আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছে কাতার। বিকেল ৪টার পরে বন্দি মুক্তি দেয়া শুরু হবে বলেও খবর প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা ও বিবিসি।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজিদ আল আনসারি বলেন, আশা করা যাচ্ছে, বিকেল ৪টার দিকে ইসরায়েল বেশ কিছু সংখ্যক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। তবে কতজনকে মুক্তি দেবে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির সঙ্গে সঙ্গেই গাজায় ত্রাণ সরবরাহ শুরু হবে। যদিও এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য।
হামাস ও ইসরায়েল চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়। আজ বৃহস্পতিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হলে জিম্মি করা ইসরায়েলিদেরও মুক্তি দেয়া হবে না বলে সাফ জানায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
আর যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়ায় আজও গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় অন্তত ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়ার কথা ইসরায়েলের। একই সঙ্গে চুক্তিতে গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে বলা হয়। এর বিনিময়ে ইসরায়েল থেকে জিম্মি করা অন্তত ৫০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস।
কিন্তু চুক্তির কিছুক্ষণ পরই ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা জানান, শুক্রবারের আগে গাজায় হামলা বন্ধ করবেন না তারা। এর কিছুক্ষণ আগেই দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাকি হানেগবি জানিয়েছিলেন, শুক্রবারের আগে হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া কাউকে মুক্তি দেয়া হবে না। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি। এ ছাড়া, হানেগবির বক্তব্যের কোনো ব্যাখ্যাও দেননি ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
এদিকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় বিশাল ত্রাণবাহী ট্রাকের বহর প্রস্তুত হয়েছে মিসরের রাফাহ সীমান্তে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেই ত্রাণ নিয়ে গাড়িগুলো ঢুকবে গাজায়, জানিয়েছে বার্তাসংস্থা সিএনএন। তবে কী ধরনের ত্রাণসামগ্রী আছে সেগুলোতে, তা বিস্তারিত জানা যায়নি।
গতকাল বুধবার মিসর সরকারের প্রেস অফিস পরিচালক আয়মান ওয়ালাশ জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ২২২ টন স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী পাঠানো হয়েছে গাজায়। সেই সঙ্গে ৬ হাজার ৬৩ টন খাদ্যসামগ্রী, ৪ হাজার ৬২৫ টন পানি এবং এক হাজার টনের বেশি অন্যান্য সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে ৩৭৮ টন জ্বালানিও সরবরাহ করা হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হামাস। এতে দেশটির ১ হাজার ২০০ জন বেসামরিক নিহত হন। সেদিন ইসরায়েলের ২৪০ জনকে জিম্মিও করে হামাস। হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় সেদিনই গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল বাহিনী। এর পর থেকে অব্যাহত হামলায় গাজার ১৪ হাজারের বেশি বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।