মাত্র দু দিনে মিয়ানমারের অন্তত ৭১৮ জন নাগরিক ভারতে ঢুকেছে; ‘যথাযথ ভ্রমণ নথিপত্র ছাড়াই’ উত্তাল মণিপুর রাজ্য দিয়ে দেশটিতে তাদের প্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রাজ্য কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় উত্তর-পূর্ব ভারতে সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বিশেষ বাহিনী আসাম রাইফলেসের কাছে তথ্য চেয়েছে বলে মঙ্গলবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মণিপুর স্বরাষ্ট্র দপ্তর বিবৃতিতে ২২ ও ২৩ জুলাই ৭ শতাধিক মিয়ানমারের নাগরিকের ভারতে প্রবেশে তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদন বলছে, কর্তৃপক্ষের দেয়া বিবৃতিতেই বোঝা যায়, আসাম রাইফেলসের নজরদারি থাকার পরও দু মাস ধরে উত্তাল মণিপুরে অন্য মিয়ানমারের এত নাগরিকের প্রবেশে তারা কতটা উদ্বিগ্ন।
নাম না প্রকাশের শর্তে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারের যেসব নাগরিক ভারতে ঢুকেছেন, তারা সঙ্গে করে অস্ত্র ব গোলাবারুদ নিয়ে এসেছেন কি না তা জানার কোনো উপায় নেই। রাজ্য সরকার এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।
২৮ আসাম রাইফেলস সদর দপ্তর জানিয়েছে, ৭১৮ জন উদ্বাস্তু ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করেছে এবং জুলাই চান্দেল জেলা হয়ে মণিপুরে প্রবেশ করেছে।
মণিপুর সরকার বলেছে, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুসারে, বৈধ ভিসা বা ভ্রমণের নথিপত্র ছাড়াই মিয়ানমারের নাগরিকদের মণিপুরে প্রবেশে বাধা দিতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সীমান্ত-রক্ষী বাহিনী আসাম রাইফেলসকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজ্য সরকার ৭১৮ জনের প্রবেশকে অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে ও অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। কারণ এর আন্তর্জাতিক প্রভাব থাকতে পারে, বিশেষ করে চলমান আইনশৃঙ্খলার সমস্যাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এর গুরুত্ব রয়েছে।
মেইতে জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত আদালতের এক আদেশের বিরোধিতা করে গত ৩ মে রাজ্যটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। তা শেষ পর্যন্ত সহিংসতায় রূপ নেয়। মণিপুরে মেইতে জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ, তবে তারা আদিবাসী হিসেবে তালিকাভু্ক্ত নয়। এ কারণে রাজ্যের আইন অনুযায়ী তারা পাহাড়ের স্থায়ী বাসিন্দার সুবিধা ভোগ করতে পারছে না।
কুকি এবং মেইতেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে চলা সংঘর্ষে এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন অনেক মানুষ। দুই মাস ধরে সেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। বহু মানুষ ঘরছাড়া।
এ অবস্থাতেই গত ৪ মে রাজ্যে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে সড়ক ধরে হাঁটায় একদল পুরুষ। ওই দুজনকে পরবর্তী সময়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগও ওঠে। এ নিয়েও চলছে ক্ষোভ।