কৌশলগত কারণে ইউক্রেন যুদ্ধে বাখমুত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সে কারণে রাশিয়া যেমন বাখমুতের পূর্ণ দখল নিতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ইউক্রেনও তেমনই শহরটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মরিয়া। ফলে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে বাখমুতেই সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি ও রক্তক্ষয়ী লড়াই চলছে।
গত ১০ মাস ধরে চলা লড়াইয়ের এক প্রকার কঙ্কালে পরিণত হয়েছে এক সময়ে লবণ-খনির জন্য বিখ্যাত শহরটি। রাশিয়ার একের এক হামলায় শহরের বেশিরভাগ স্কুল, বাড়ি ও দোকানপাট ধুলায় মিশে গেছে।
এর মধ্যে রাশিয়া বাখমুতের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি করেছে। বিষয়টির উল্লেখ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির সেনাবাহিনী ও ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন।
তবে ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাশিয়ার ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘বাখমুতে যুদ্ধের তীব্রতা কমলেও এর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ এখনও ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
সূত্র: ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার। ২১ মে, ২০২৩।
ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছরপূর্তিতে ২০২২ সালের মে থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত এক বছরে বাখমুতে ঘটা ধ্বংসযজ্ঞের স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার টেকনোলজিস। সময়ের ধারাবাহিকতায় বাখমুতে ধ্বংসের মাত্রা বুঝতে সহযোগিতা করবে ছবিগুলো।
উপরের ছবি দুটির প্রথমটি ২০২২ সালের ৮ মে বাখমুতের স্কুল ১২ ও এর আশপাশের বাসবভবনগুলোর। ডানে চলতি বছরের ১৫ মে ওই অঞ্চলের চিত্র।
২০২২ সালের ৮ মে বাখমুত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও রেডিও টাওয়ার। ডানে চলতি বছরের ১৫ মে ওই অঞ্চলের চিত্র।
২০২২ সালের ৮ মে বাখমুত থিয়েটার ও আশেপাশের দোকানগুলোর অবস্থা। ডানে ১৫ মে ২০২৩ তারিখে ওই অঞ্চলের বর্তমান অবস্থা।
২০২২ সালের ৮ মে বাখমুতের আরেকটি স্কুল ও আশেপাশের আবাসিক এলাকার চিত্র। ডানে ওই অঞ্চলের গত ১৫ মের চিত্র।
যুদ্ধের আগে বাখমুতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের বসবাস থাকলেও বর্তমানে তা কয়েক হাজারে নেমে এসেছে।
রেড ক্রসের তথ্য অনুসারে, ভয়াবহ পরিস্থিতি সত্ত্বেও বর্তমানে ১০ হাজারের মতো বেসামরিক, খুবই বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ইউক্রেনীয় নাগরিক সেখানে বসবাস করছেন।
কৌশলগত যুদ্ধের পরিবর্তে বর্তমানে বাখমুত যুদ্ধ প্রতীকী লড়াইয়ে রূপ নিচ্ছে। বছর পেরিয়ে চলা যুদ্ধে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সোলেদার শহর দখল ছিল প্রত্যক্ষভাবে রাশিয়ার প্রথম বড় অর্জন। সেই শহরটির দখল অবশ্য ক্রেমলিন বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি। এবার কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাখমুত শহর দখলে নিতে পারলে তা হবে রুশ বাহিনীর বড় অর্জন।