অস্ট্রেলিয়ার এক বনে হারিয়ে গিয়ে শুধু ললিপপ খেয়ে ও এক বোতল মদ পান করে পাঁচদিন বেঁচে ছিলেন ৪৮ বছর বয়সী এক নারী।
গত ৩০ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার একটি ঘন বনে ভ্রমণে যান লিলিয়ান ইপ। কিন্তু বনের রাস্তায় একটি ইউটার্ন নিতে গিয়ে তার গাড়ির চাকা কাদায় আটকে যায়।
বিবিসির খবরে বলা হয়, সে সময় তার কাছে উপহার দেয়ার জন্য এক বোতল মদ ও কিছু ললিপপ ছিল। লিলিয়ান যদিও মদপান করেন না, কিন্তু উদ্ধারকারী দল এসে পৌঁছানোর আগে তিনি ওই মদ ও ললিপপগুলো খেয়েই জীবনধারণ করেন।
৫ মে ভিক্টোরিয়ার জরুরি পরিষেবার একটি দল হেলিকপ্টারে অনুন্ধান করার সময় বনে লিলিয়ানকে পান।
উদ্ধার হওয়ার পর নাইননিউজকে অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে লিলিয়ান বলেন, ‘ভেবেছিলাম আমি মরেই যাবো। ৫ মে আমার শরীর একেবারেই ছেড়ে দিয়েছিল।’
‘বাঁচার আশা’ ছেড়ে দিয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি চিঠি লেখেন।
ভিক্টোরিয়া পুলিশ জানায়, লিলিয়ানকে নিকটবর্তী শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে বনের মধ্যে পাওয়া যায়। কিন্তু তার শরীর এতই দুর্বল ছিল যে, হেঁটে তিনি ওই পথ পাড়ি দিতে পারতেন না। তাই গাড়িতে থাকারই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
স্থানীয় ওডোঙ্গা থানার সার্জেন্ট মার্টিন টপরি বলেন, ‘খাওয়ার জন্য কিছু ললিপপ থাকলেও তার কাছে পানি ছিল না। মাকে দেয়ার জন্য তিনি এক বোতল মদ কেনেন। সেটাই ছিল তার কাছে থাকা একমাত্র পানীয়।’
‘তিনি গাড়ি থেকে নেমে বনের মধ্যে ঘোরাঘুরি না করে ভালো করেছেন। এতে পুলিশের তাকে খুঁজে পেতে সহজ হয়েছে।’
খাবার ও পানির অভাবে ভুগেও প্রচণ্ড শীতে ওই পাঁচদিন তিনি কিভাবে বেঁচে ছিলেন- তার বর্ণনা দিতে গিয়ে সার্জেন্ট মার্টিন টপরি বলেন, ‘ওই সময় রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রিতে নেমে গেলেও লিলিয়ান তার সাধারণ জ্ঞান প্রয়োগ করেন। তিনি যেহেতু নিজে গাড়িটি ঠেলে কাদা থেকে বের করতে পারতেন না, তাই বৃথা শক্তি ব্যয় না করে তিনি রাতে হিটার চালিয়ে গাড়িতেই বসে থাকতেন।’
প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য লিলিয়ানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা নিয়ে তিনি মেলবোর্নে ফিরে গেছেন বলে খবরে বলা হয়।