বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাজায় অনাহার এবং তীব্র খাদ্য সংকটে ৩৭০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২৩:৪৯

গাজায় অনাহার এবং তীব্র খাদ্য সংকটে এখন পর্যন্ত ৩৭০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩১ জনই শিশু। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপরেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত চলছেই।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে তিনজন অনাহারে প্রাণ হারিয়েছে। এদিকে বেশ কিছু মেডিক্যাল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজাজুড়ে কমপক্ষে ৩১ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এরমধ্যে ১৯ জনই গাজা সিটির। এছাড়া আরও চারজন ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলের গুলিতে নিহত হয়েছে।

হামাস জানিয়েছে, তারা গাজা পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন জাতীয় প্রশাসন গঠন এবং একটি ব্যাপক যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য প্রস্তুত। এই চুক্তির আওতায় সব ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় হামাসের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তার মন্ত্রিসভার নির্ধারিত শর্তে যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হতে পারে।

ইসরায়েলের অতি-ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীরের প্রায় সব অংশকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন এবং নেতানিয়াহুর অনুমোদনের আহ্বান জানিয়েছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজাজুড়ে কমপক্ষে ৬৩ হাজার ৭৪৬ জন নিহত এবং ১ হাজার ৬১ হাজার ২৪৫ জন আহত হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় মোট ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়।

গাজায় প্রতিবন্ধী হয়েছে ২১ হাজার শিশু

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার কমপক্ষে ২১ হাজার শিশু প্রতিবন্ধী হয়েছে। গত বুধবার জাতিসংঘের একটি কমিটি এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সংক্রান্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় দুই বছরে প্রায় ৪০ হাজার ৫০০ শিশু ‘নতুন যুদ্ধ-সম্পর্কিত আঘাতের’ শিকার হয়েছে, যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

ফিলিস্তিনি অঞ্চলের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বলা হয়েছে, গাজায় সেনাবাহিনীর আক্রমণের সময় স্থানীয়দের সরে যাওয়ার ব্যাপারে ইসরায়েলি সেনাদের আদেশগুলো প্রায়শই শ্রবণশক্তি বা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছায়নি, যার ফলে এসব ব্যক্তিকে সরিয়ে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনিরাপদ এবং অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে, এর মধ্যে রয়েছে- চলাচলের সহায়তা ছাড়াই বালি বা কাদার মধ্য দিয়ে হামাগুড়ি দেওয়া।’

কমিটি জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা আনার উপর বিধিনিষেধ প্রতিবন্ধীদের উপর অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাব ফেলছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সহায়তা গ্রহণে গুরুতর ব্যাঘাতের সম্মুখীন হয়েছেন, অনেককে খাদ্য, বিশুদ্ধ জল বা স্যানিটেশন ছাড়াই এবং বেঁচে থাকার জন্য অন্যদের উপর নির্ভরশীল করে তোলা হয়েছে।’

ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি আরব আমিরাতের

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দীর্ঘ প্রায় ২৩ মাস ধরে অমানবিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস উৎখাত ও জিম্মি মুক্তির নাম দিয়ে প্রতিদিনই দখলদার বাহিনী ভয়াবহ হামলা ও নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে নিরীহ গাজাবাসীর ওপর। দখলদারদের নারকীয় এ হত্যাযজ্ঞ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যুহীন একটি দিন পার করতে পারেনি ভূখণ্ডটির বাসিন্দারা।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে প্রকাশ্য ঘোষণা দেওয়ার পর তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন পেয়ে যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইসরায়েল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ হলেও সেগুলোকে গ্রাহ্যই করছে না নেতানিয়াহু ও তার প্রশাসন। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আদালতও অমানবিক এ আগ্রাসনে লাগাম টানতে ব্যর্থ। এরই মধ্যে দখলকৃত পশ্চিম তীর পুরোপুরি ইসরায়েলের মানচিত্রে মিলিয়ে ফেলার পরিকল্পনাও এখন প্রকাশ্যে।

এ অবস্থায় এবার দখলদার রাষ্ট্রটিকে কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ইসরায়েল তার এই দখলনীতিতে অটল থাকলে আমিরাতের সঙ্গে হওয়া তাদের আব্রাহাম চুক্তি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশটি। মূলত, আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতেই করা হয়েছিল এই চুক্তি। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েল তার মানচিত্রে অধিকৃত পশ্চিম তীর পুরোপুরি যুক্ত করে নিলে, তা চূড়ান্ত সীমা লঙ্ঘনের শামিল হবে বলে সতর্ক করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

দেশটির জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক লানা নুসেইবেহ বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের সম্ভাবনা নস্যাৎ করবে।

আরব আমিরাতের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)। তবে, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলের সরকার।

নুসেইবেহ এমন এক সময়ে এ মন্তব্য করেছেন, যখন ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ পশ্চিম তীরের প্রায় চার-পঞ্চমাংশ দেশটির সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।

১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে প্রায় ১৬০টি বসতি গড়ে তুলেছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক আইনে এসব বসতি অবৈধ।

রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দেখতে চায় ফিলিস্তিন। ওই অঞ্চলে প্রায় ৭ লাখ ইহুদি ও ৩৩ লাখ ফিলিস্তিনির বসবাস।

২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে তৎকালে পশ্চিম তীরের কিছু অংশ দেশটির সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর