বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শ্রীলঙ্কায় নতুন সরকারের লক্ষ্য থাকবে ভোট

  •    
  • ১১ জুলাই, ২০২২ ১৫:৩০

একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের আহ্বান করা এবং জনগণকে ভোটের মাধ্যমে একটি নতুন সংসদ নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া।

অবশেষে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছে শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলগুলো। দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ঘোষণার পর এক বৈঠক থেকে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।

সে সঙ্গে দেশটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল লক্ষ্য থাকবে জনগণের ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করা। সেই লক্ষ্যে বৈঠক থেকে নতুন সরকারের যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তার অন্যতম বলা হয়েছে নির্বাচন আয়োজন।

অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়ে দেশটির ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসের পদত্যাগ দাবিতে হাজার হাজার মানুষ রাজধানী কলম্বোয় বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভরত জনতা দেশটির প্রেসিডেন্ট ভবন ঘিরে ফেলার আগেই পালিয়ে যান গোতাবায়া। পরে তিনি ঘোষণা দেন আগামী বুধবার পদত্যাগ করবেন।

সেই সঙ্গে কিছুদিন আগেই ক্ষমতা নেয়া প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেও পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। দাপ্তরিক কিছু কাজ বুঝিয়ে দিতে তাদের সময় প্রয়োজন জানিয়ে আগামী বুধবার তাদের পদটি থেকে সরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন পার্লামেন্টের স্পিকার ইয়াপা আবেবর্ধনে।

তারা দুজন ক্ষমতা ছেড়ে দিলে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব বর্তাবে স্পিকারের ওপর। তিনি ৩০ দিনের জন্য ওই পদে থাকতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি একটি সরকার গঠন করে দেবেন।

দ্য আইল্যান্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার এসব বিষয় নিয়ে এক জরুরি সভা করে দেশটির বিরোধী দলগুলো। সেখানে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবও দেয়া হয়।

পুলিশি পাহারায় স্পিকারের সভাপতিত্বে অনলাইনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, পার্লামেন্টের প্রতিনিধিসহ অনেকেই অংশ নেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেও অংশ নিয়েছিলেন। সেখানেই স্পিকার ইয়াপা আবেবর্ধনেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার প্রস্তাব করেন।

বৈঠকের পর গোতাবায়া রাজাপাকসের কাছে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবগুলো হলো- ১. প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে তাদের পদ থেকে যত দ্রুত সম্ভব পদত্যাগ করা।

২. সংবিধান অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সাত দিনের মধ্যে সংসদ আহ্বান করা এবং সর্বসম্মতিক্রমে একজন প্রেসিডেন্ট নিয়োগ।

৩. ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের অধীনে বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের ঐকমত্যের শর্ত অনুসারে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা।

৪. এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের আহ্বান করা এবং জনগণকে ভোটের মাধ্যমে একটি নতুন সংসদ নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া।

বৈঠকে এর বিকল্প প্রস্তাবও করেছেন প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে।

তার প্রস্তাবে অবিলম্বে প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগ করতে এবং প্রধানমন্ত্রী ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেয়া।

একজন নতুন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন। যদি এটি গ্রহণযোগ্য না হয়, তবে প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী উভয়েরই পদত্যাগ করা, সে ক্ষেত্রে সংসদ থেকে একজন প্রতিনিধিকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা উচিত। সেই সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পথ বের করতে সব দলের সম্মতিতে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা।

বর্তমান পার্লামেন্টে ১৫ দলের প্রতিনিধিরা প্রতিনিধিত্ব করছেন।

কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চরম মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে, মুদ্রাস্ফীতিও আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ।

এ অবস্থায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। একপর্যায়ে রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।

বিক্ষোভ দমাতে এপ্রিলের শুরুতে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ বিক্ষোভ দমাতে ব্যর্থ হয়। উল্টো মাত্রা আরও তীব্র হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় মে মাসে পদত্যাগ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রনিল বিক্রমাসিংহে।

এই পর্যায়ে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। নিহত হন এক এমপি। অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপির বাড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িও জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

এ বিভাগের আরো খবর