ভালোবেসে একজনের সঙ্গেই জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন। তবে ভালো লেগে যায় আরেকজনকে। বাধে গণ্ডগোল। একপর্যায়ে দুই নারীকেই বিয়ে করেন পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার যুবক রোহিনী চন্দ্র বর্মণ। এবার সেই একই ঘটনা ঘটল ভারতের ঝাড়খণ্ডে।
ঝাড়খণ্ডের লোহারদাগার ভান্দ্রা ব্লকের বান্দা গ্রামে সম্প্রতি একই দিনে একই মণ্ডপে দুই নারীকে একসঙ্গে বিয়ে করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন সন্দীপ ওরাও নামের এক যুবক।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্দীপ ও কুসুম লাকড়া তিন বছর ধরে একই সঙ্গে বসবাস করতেন। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে। ভালোই চলছিল সংসার। তবে এই প্রেমের গল্প এক বছর আগে নয়া মোড় নেয়।
সন্দীপ পশ্চিমবঙ্গের একটি ইটের ভাটায় কাজ করতে যান। সে সময় তার সঙ্গে দেখা হয় স্বাতী কুমারীর। স্বাতীও সেই ইট ভাটায়ই কাজ করতেন। সন্দীপ গ্রামের বাড়িতে ফেরার পরও দুজনের দেখা-সাক্ষাৎ অব্যাহত ছিল।
দুই পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসী তাদের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে বিরোধিতা শুরু করেন। দীর্ঘ ঝগড়া, বিবাদ ও অশান্তির পর গ্রামবাসী পঞ্চায়েত ডাকেন। এতেই সিদ্ধান্ত হয়, সন্দীপকে দুই নারীকেই বিয়ে করতে হবে। এরপরই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
সন্দীপ বলেন, ‘আমি জানি এই বিয়ে নিয়ে আমাকে আইনি জটিলতায় পড়তে হবে। তবে আমি দুজনকেই ভালোবাসি, তাদের কাউকে ছাড়াই থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
ভাইরাল হওয়া পঞ্চগড়ের রোহিনী চন্দ্র বর্মণের বিয়ের ছবি। সংগৃহীত
এর আগে গত এপ্রিলে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় দুই প্রেমিকাকে একসঙ্গে বিয়ে করে আলোচনায় আসেন রোহিনী চন্দ্র বর্মণ। তিন পরিবারের সম্মতিতে দুই বিয়ের পর দুই পাশে দুই স্ত্রীকে রেখে ছবি তোলেন রোহিনী। দুই বউয়ের মাঝে দাঁড়ানো তার সে ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয় মুহূর্তে।
আটোয়ারীর বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীদ্বার এলাকার ২৫ বছরের রোহিনী তার নিজের বাড়িতেই আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ বছরের ইতি রানী ও ২১ বছরের মমতা রানীকে বিয়ে করেন।
রোহিনী বলেন, ‘প্রথমে যাকে ভালোবেসেছি তাকে বিয়ে করেছি। পরে মমতার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বিয়ে করতে হবে বুঝিনি। তিন পরিবারের সিদ্ধান্তেই আমি আবার বিয়ে করেছি।’
স্থানীয়রা জানান, ইতি রানীর সঙ্গে রোহিনীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল৷ কয়েক মাসে আগে তারা দুজন স্থানীয় মন্দিরে গিয়ে গোপনে বিয়ে করেন। এরপর রোহিনী নতুন করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মমতা রানীর সঙ্গে। ১২ এপ্রিল দেখা করতে গেলে মমতার বাড়ির লোকজন রোহিনীকে আটক করে রাখেন এবং পরের দিন তারা রোহিনী ও মমতার বিয়ে দিয়ে দেন।
রোহিনীর বিয়ের খবর শুনে বুধবার সকালে রোহিনীর বাড়িতে অনশন শুরু করেন ইতি রানী৷ পরে রাতে তিন পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে আবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইতি ও মমতার সঙ্গে রোহিনীর বিয়ে সম্পন্ন হয়। দুই বউকে এক সঙ্গে ঘরে তুলে নেন রোহিনী৷
অবশ্য দুই বউয়ের সঙ্গে সংসার করা হয়নি রোহিনীর। বিয়ের মাত্র ২২ দিনের মাথায় এক স্ত্রী মমতা রানীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে তার।
ছত্রিশগড়ে একসঙ্গে দুই নারীকে বিয়ে করেন চন্দু মৌরিয়া। সংগৃহীত
গত বছরের জানুয়ারিতে ভারতের ছত্তিশগড়েও একসঙ্গে দুই নারীকে বিয়ের একই ঘটনা ঘটে। ওই সময় চন্দু মৌরিয়া নামের এক ব্যক্তি তার দুই প্রেমিকা সুন্দরী কাশ্যপ এবং হাসিনা বাঘেল দুজনকেই একই দিনে, একই মন্দিরে বিয়ে করেন সব সামাজিক রীতি মেনে।