বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুদ্ধের ১০০ দিনে জ্বালানি বেচে রাশিয়ার আয় ৯৮ বিলিয়ন ডলার

  •    
  • ১৩ জুন, ২০২২ ১৭:৪৫

রাশিয়া এই সময়ের মধ্যে জ্বালানি বিক্রি করে যা আয় করেছে, তার একটি বড় অংশ এসেছে ইউক্রেনের বন্ধুপ্রতিম ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো থেকেই। অথচ শঙ্কা ছিল, ইউক্রেন, আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোর আহ্বানে রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ রাখবে তারা।

ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়ার হুমকিতে ছিল রাশিয়া; বিশ্লেষকরা বলছিলেন জ্বালানি না বেচতে পারলে বেশ ক্ষতির মুখে পড়তে হবে দেশটিকে। তবে তথ্য বলছে, তেমন কিছু ঘটেনি!

এখনও পর্যন্ত জ্বালানি বিক্রির হিসাব দেখলে অবশ্য তাই-ই মনে হয়। যুদ্ধের প্রথম ১০০ দিনে জ্বালানি বেচে সব মিলিয়ে দেশটির আয় ৯৮ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ যুদ্ধরত অবস্থায় রাশিয়া দিনে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি রপ্তানি করেছে।

রাশিয়া এই সময়ের মধ্যে জ্বালানি বিক্রি করে যা আয় করেছে, তার একটি বড় অংশ এসেছে ইউক্রেনের বন্ধুপ্রতিম ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো থেকেই। অথচ শঙ্কা ছিল, ইউক্রেন, আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোর আহ্বানে রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ রাখবে তারা।

ফিনল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিচার্স অ্যান্ড এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতেই উঠে এসেছে বিস্তারিত তথ্য।

আল জাজিরা বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ দেশগুলো ইউক্রেনে নগদ অর্থ ও অস্ত্র পাঠায়। একের পর এক রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাও এসেছে এ দেশগুলোর পক্ষ থেকে।

একপর্যায়ে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। তার সঙ্গে থাকার আশা দেন আমেরিকা-ইইউয়ের দেশগুলোর নেতারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে যে পরিমাণ গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দরকার হয়, ইউক্রেন যুদ্ধের আগে তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পাঠাত রাশিয়া। গ্যাসের ৪০ ভাগ এবং জ্বালানি তেলের ২৭ ভাগ যেত এই দেশ থেকে।

তবে যুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা এবং ইউরোপের দেশগুলো আমদানির এই মাত্রা আস্তে আস্তে কমিয়ে তিন ভাগের দুই ভাগে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে। অবশ্য উল্টো পথেও হাঁটে কেউ কেউ। ভারত বরং সস্তায় রাশিয়ার তেল কেনার ঘোষণা দেয়।

সিআরইএর প্রতিবেদন বলছে, যুদ্ধের প্রথম ১০০ দিনে রাশিয়া যে জ্বালানি রপ্তানি করেছে তার ৬১ ভাগই নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। এর জন্য এসব দেশকে ব্যয় করতে হয়েছে ৬০ বিলিয়ন ডলার।

তবে সব মিলিয়ে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানিতে শীর্ষ দেশ চীন। ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি কিনেছে দেশটি। এরপর জার্মানি কিনেছে ১২ দশমিক ৭ বিলিয়ন, ইতালি ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন, নেদারল্যান্ড ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন আর ভারত কিনেছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি।

যুদ্ধের ১০০ দিনে জ্বালানির মধ্যে রাশিয়া সবচেয়ে বেশি অর্থ আয় করেছে ক্রুড ওয়েল থেকে। ৪৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে এই জ্বালাানি বিক্রি করেছে তারা। গ্যাস বিক্রি হয়েছে ২৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার, তেল বিক্রি হয়েছে ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি বিক্রি করে ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন এবং কয়লা বিক্রি করে দেশটির আয় হয়েছে ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।

পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থি বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে গত ফেব্রুয়ারিতে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০১৪ সাল থেকে এ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই শুরু করেন।

এমন প্রেক্ষাপটে বেশ কিছুদিন সীমান্তে সেনা মোতায়েন রেখে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।

বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছেন প্রায় ৫০ লাখ মানুষ।

যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

এ বিভাগের আরো খবর