ভারতের পাঞ্জাবের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী-র্যাপার ও কংগ্রেস নেতা সিধু মুসে ওয়ালা হত্যার পেছনে দুই গ্যাংস্টার কলকাঠি নেড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রোববার পাঞ্জাবের মানসায় গুলি করে হত্যা করা হয় সিধুকে। পরে পুলিশের তদন্তে ওই দুজনের নাম আসে হত্যাকাণ্ডে।
অভিযুক্তরা হলেন নয়াদিল্লির তিহার জেলে বন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণই এবং কানাডার গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রার। এদের মধ্যে গোল্ডি ব্রার এক ফেসবুক পোস্টে এই হামলার দায় স্বীকারও করে নিয়েছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তিহার জেলে বন্দি লরেন্স বিষ্ণই গ্যাং এবং কানাডার গোল্ডি ব্রার যৌথভাবে মুসেওয়ালার ওপর হামলা চালিয়েছেন। পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে পাঞ্জাব পুলিশ।
শনিবার ৪২৪ ব্যক্তির নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে পাঞ্জাব পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সিধু। নিরাপত্তা তুলে নেয়ার একদিনের মধ্যেই গুলিতে নিহত হন তিনি।
গত বছর ডিসেম্বরে পাঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন সিধু। মানসা থেকে পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। গ্যাংস্টার স্টাইলের র্যাপের জন্য যুবকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় তিনি।
সিধুর গাড়িতে ৩০টি বুলেটের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হত্যার স্থানে পাওয়া বুলেটগুলো থেকে পুলিশ মনে করছে, হামলায় একটি এ এন ৯৪ রাশিয়ান অ্যাসল্ট রাইফেল ব্যবহার করা হয়েছিল।
সিধুর বাবা বলকাউর সিং পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, কিছুদিন ধরেই গ্যাংস্টারদের কাছ থেকে মুক্তিপনের ফোন পেয়েছিলেন সিধু। পাঞ্জাব পুলিশ এই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নিয়েছে।
এ ছাড়ার সিধুর বাবা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে একটি চিঠি লিখে তার ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে সিবিআই এবং এনআইএর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেছেন, বিষয়টি হাইকোর্টের একজন বর্তমান বিচারপতির দ্বারা তদন্ত করা উচিত। যে কর্মকর্তারা নিরাপত্তা প্রত্যাহারের আদেশ জনসমক্ষে করেছেন তাদের জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে এই ঘটনাকে গ্যাং ওয়ারের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য পাঞ্জাবের ডিজিপির ক্ষমা চাওয়া উচিত।
কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তেওয়ারি বলেছেন, পঞ্জাবে নতুন সরকার গঠনের পর থেকে কিছু কাবাডি খেলোয়াড়ের হত্যা, মোহালিতে পাঞ্জাব গোয়েন্দা সদর দপ্তরে হামলা, জলন্ধরে পুলিশ কর্মীদের উপর হামলা এবং এখন সিধু মুসেওয়ালার হত্যাসহ একাধিক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। সীমান্তবর্তী কোনো রাজ্যে শান্তি ভঙ্গ হলে তার নানা পরিণতি হতে পারে।
পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালা হত্যার সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে উত্তরাখণ্ডে।
পুলিশ জানিয়েছে, হেমকুন্ড সাহিব যাত্রার তীর্থযাত্রীদের মধ্যে লুকিয়ে ছিল সন্দেহভাজন ব্যক্তি। পাঞ্জাব এবং উত্তরাখণ্ড পুলিশের যৌথ দল তাকে আটক করে। তাকে পাঞ্জাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পুলিশ বলছে, দেরাদুন থেকে আটক সন্দেহভাজন লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য। উত্তরাখণ্ড থেকে আরও পাঁচ সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। সবাইকে পাঞ্জাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।