বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অমিত শাহের ‘হিন্দি’ নিয়ে বাড়ছে বিতর্ক

  •    
  • ১০ এপ্রিল, ২০২২ ২৩:৪৫

অসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অমিত শাহের ঘোষণার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে কোনও নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তিনি শুধু বলেছিলেন ছাত্রদের হিন্দি শিখতে হবে। তিনি বলেননি অসমিয়া শেখা বন্ধ করুন। মাতৃভাষার পরে একজন ব্যক্তির হিন্দি জানা উচিত।’

ভারতের সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটির সভাপতি অমিত শাহের একটি অভিমত নিয়ে চলছে প্রতিক্রিয়া। উত্তর-পূর্ব ভারতের আট রাজ্যে দশম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি ‘বাধ্যতামূলক’ করা নিয়ে তার মন্তব্যে বাড়ছে বিতর্ক।

সরকারি নির্দেশনা জারি না হলেও বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দেয়া বক্তব্য ঘিরে অসামে তুমুল সমালোচনা চলছে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক করার ‘সিদ্ধান্ত’ ফিরিয়ে নিতে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি সংগঠন।

সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটির ৩৭তম সভায় কমিটির সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘উত্তর-পূর্বের আট রাজ্যে দশম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক করা হবে। এজন্য ২ হাজার ২০০ জন হিন্দি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। হিন্দি ভারতের ভাষা, এটা স্থানীয় ভাষা নয়। তাই ইংরেজির বিকল্প হওয়া উচিত হিন্দি।’

অসামের বাসিন্দারা জানান, ভারতের উত্তর-পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ ছাড়া সব জায়গায় অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলকভাবে পড়ানো হয়। অরুণাচলের ভাষা ফ্রাঙ্কা, যা দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক বিষয়। এ অবস্থায় অমিত শাহের বক্তব্য নিয়ে সুশীল সমাজ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রাজনৈতিক মহলেও এ নিয়ে চলছে সমালোচনা।

অসামের শীর্ষ সাহিত্য সংগঠন অসম সাহিত্য সভা এক বিবৃতিতে বলেছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত অসমিয়া ও অন্যান্য আদিবাসী ভাষার উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়া। হিন্দি বাধ্যতামূলক করার আমরা বিরোধিতা করছি। এই ধরনের পদক্ষেপ উত্তর-পূর্বের অসমিয়া এবং সব আদিবাসী ভাষার জন্য অন্ধকার ভবিষ্যৎ তৈরি করবে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করা হোক।

নর্থইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্যামুয়েল বি জায়রা বলেন, ‘আমরা সবসময় তিনটি ভাষার সূত্র অনুসরণ করেছি। ইংরেজি, হিন্দি ও স্থানীয় ভাষা। মাতৃভাষা বাধ্যতামূলক করা উচিত, আর হিন্দি করা যেতে পারে বিকল্প ভাষা।’

এই অঞ্চলের ছাত্র সংগঠনগুলোর যৌথ মঞ্চ বিষয়টিকে ‘আরোপিত’ বলে অভিহিত করছে।

অসামের বিরোধী দলীয় নেতা দেবব্রত শইকীয়া শিক্ষায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ নিয়ে আপত্তি জানান। তিনি বলেন, ‘ভাষার বিষয়টি প্রত্যেক রাজ্যের নিজস্ব। ইংরেজির পরিবর্তে হিন্দিতে গুরুত্ব আমাদের ছাত্রদের ভবিষ্যতে ভালো করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।’

মেঘালয়ের কংগ্রেস বিধায়ক আমপারিন লিংডো বলেন, ‘আমি জানি না কোন পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেঘালয়ে যেখানে ষষ্ঠ তফসিল আছে, সেখানে তারা হিন্দি চাপিয়ে দিতে পারে না। এখানে এ ধরণের নির্দেশ চলবে না।’

অসাম জাতীয় পরিষদের সভাপতি লুরিনজ্যোতি গগৈ বলেন, ‘আসাম চুক্তির ষষ্ঠ ধারা সম্পর্কিত উচ্চ স্তরের কমিটি সুপারিশ করেছিল যে, সব রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্কুলে অসমিয়াকে বাধ্যতামূলক করা হবে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই অসমিয়া ভাষার সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। তিনি এটি ব্যবহারের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।’

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অমিত শাহের ঘোষণার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে কোনও নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তিনি শুধু বলেছিলেন ছাত্রদের হিন্দি শিখতে হবে। তিনি বলেননি অসমিয়া শেখা বন্ধ করুন। মাতৃভাষার পরে একজন ব্যক্তির হিন্দি জানা উচিত।’

এ বিভাগের আরো খবর