এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার বিপক্ষে লড়ছে ইউক্রেন। এই যুদ্ধে বারবারই পশ্চিমাদের সহায়তা চেয়ে আসছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। সেই অপ্রাপ্তির সুর যোগ করে এবার বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো নিয়ে যে দ্বন্দ্বের শুরু; যুদ্ধে সেই ন্যাটোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন জেলেনস্কি। পশ্চিমারা নয়, বরং রাশিয়া এখন ন্যাটো চালাচ্ছে কি না সে বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় শনিবার রাতে এক ভিডিওতে তিনি এসব নিয়ে কথা বলেন বলে বিবিসির লাইভে জানানো হয়েছে।
ভিডিওতে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বিমান, ট্যাংক ও ক্ষেপণাস্ত্র নিরাপত্তাব্যবস্থা পাঠাতে পশ্চিমা সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শুধু মেশিনগান দিয়ে তো আর রুশ বিমান ভূপাতিত করা যায় না।
জেলেনস্কি বলেন, ‘ন্যাটো কী করছে? এটা কি রাশিয়া চালাচ্ছে? তারা কার জন্য অপেক্ষা করছে? ৩১ দিন হয়ে গেছে। আমরা ন্যাটোর কাছে যা আছে তার মাত্র এক ভাগ চাইছি, এর বেশি কিছু নয়।’
অবশ্য ন্যাটোতে যোগ দিতে এর আগে কয়েক দফা আহ্বান জানান তিনি। ন্যাটো যেন তাৎক্ষণিক ইউক্রেনকে সদস্যপদ দেয় তারও দাবি করেন জেলেনস্কি। তবে এবার সদস্যপদ নয়, উল্টো এই জোটের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এই প্রেসিডেন্ট।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ না দেয় এ ব্যাপারে বরাবরই তাদের সতর্ক করে আসছে রাশিয়া। সর্বশেষ যুদ্ধের কারণ হিসেবে তারা বলছে, দেশটিতে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিকসহ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে পণ্য আমদানি। কোনো কোনো দেশ ইউক্রেনে অস্ত্র, অর্থসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা পাঠিয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছে ইউক্রেন।
এরই মধ্যে কয়েক দফা বৈঠকে বসেছে ইউক্রেন-রাশিয়া। এসব বৈঠকে ন্যাটোতে যোগ না দিতে ইউক্রেনকে প্রস্তাব দিয়েছেন পুতিনের প্রতিনিধিরা। তবে বৈঠকে যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কার্যত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।