বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাজছে বিশ্বায়নের ‘মৃত্যুঘণ্টা’

  •    
  • ২৬ মার্চ, ২০২২ ১৫:১৪

ফিঙ্কের মতে, শীতল যুদ্ধের পর থেকে চলে আসা যে বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত হয়েছি, তা ‘নতুন বিশ্বব্যবস্থায় প্রতিস্থাপিত হওয়ায়’ ব্ল্যাকরক এবার ‘দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত পরিবর্তনের’ মাধ্যমে মানিয়ে নেবে। বিশ্বায়ন ভেঙে যাওয়া ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এ ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখতে হবে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে বর্ধিত মুদ্রাস্ফীতি মেনে নিতে হবে। এরই মধ্যে গত ৪০ বছরে সবচেয়ে বেশি মুদ্রাস্ফীতি দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও কর্মসংস্থানও হ্রাস পাবে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ সেনারা। যা এখনও চলছে। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণের’ জন্য এই অভিযান। তবে পশ্চিমারা রাশিয়ার সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্তকে মেনে নেয়নি। তারা শুধু ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তাই করছে না, রাশিয়ার ওপর দিচ্ছে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া থেকে। দেশটির ব্যাংকগুলোকে এরই মধ্যে সুইফট থেকে বের করে দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।

রাশিয়াও পাল্টা পদক্ষেপ নিচ্ছে, দেশটি এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমা মুদ্রায় তাদের অনাস্থার কথা। ইউক্রেন ইস্যুতে যারা পাশে নেই, তাদেরকে রুশ জ্বালানি ও পণ্য রুবলে কিনতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে কি বিভক্তির সৃষ্টি হচ্ছে।

এবার আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্ল্যাকরকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ল্যারি ফিঙ্ক ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে শাস্তি দেয়ার প্রচেষ্টা বিশ্বায়নের বিনাশ নিয়ে আসবে।

এই সংকটের প্রভাব শুধু পূর্ব ইউরোপেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এমনকি সামনের কয়েক দশকে এর প্রভাবের বিষয়ে আমরা ভবিষ্যদ্বাণীই করতে পারি না।

ল্যারি ফিঙ্কের প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরক যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির অর্ধেকের সমতুল্য প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদের বৈদেশিক বিনিয়োগ তত্ত্বাবধান করে। প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই ফিঙ্কের মতামত বিনিয়োগকারীরা খুব ভালোভাবেই মূল্যায়ন করে।

ব্ল্যাকরকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ল্যারি ফিঙ্ক। ছবি: সংগৃহীত

ল্যারি ফিঙ্ক বৃহস্পতিবার বিনিয়োগকারীদের দেয়া এক চিঠিতে বলেছেন, গত তিন দশক ধরে আমরা বিশ্বায়নের যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ তার অবসান ঘটিয়েছে। আমরা দেশগুলোর মধ্যে, প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এমনকি মানুষের মধ্যে গত দুই বছরের মহামারির মধ্যেও যে সংযোগ দেখেছি তা অনেক সম্প্রদায় ও মানুষ নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন ভেবেছে, যা সমাজজুড়ে আমরা যে মেরুকরণ ও চরমপন্থি আচরণ দেখতে পারছি, তা বাড়িয়ে দিয়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন সংকটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে মস্কোর বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ শুরু করে, যার মধ্যে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থাপনে বাধা দেয়ার মতো পদক্ষেপের কথাও ফিঙ্ক উল্লেখ করেছেন। পুঁজিবাজার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ব্যবসা তাদের সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ও কার্যক্রম বন্ধ করে সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে।

এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও বলেছেন, রাশিয়ার ওপর একের পর এক অবরোধ দেয়ার পরে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর আস্থা রাখার কোনো কারণ নেই।

ফিঙ্কের মতে, শীতল যুদ্ধের পর থেকে চলে আসা যে বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত হয়েছি, তা ‘নতুন বিশ্বব্যবস্থায় প্রতিস্থাপিত হওয়ায়’ ব্ল্যাকরক এবার ‘দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত পরিবর্তনের’ মাধ্যমে মানিয়ে নেবে। বিশ্বায়ন ভেঙে যাওয়া ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এ ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখতে হবে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে বর্ধিত মুদ্রাস্ফীতি মেনে নিতে হবে। এরই মধ্যে গত ৪০ বছরে সবচেয়ে বেশি মুদ্রাস্ফীতি দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও কর্মসংস্থানও হ্রাস পাবে।

ইউক্রেন সংকট নিয়ে ফিঙ্ক বলেছিলেন, এর প্রভাবে ডিজিটাল মুদ্রার বিকাশকে ত্বরান্বিত করছে এবং জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে দূরে সরে যাওয়ার গতিও বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে রাশিয়াও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর জন্য আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সিকে বিবেচনা করছে।

এ ছাড়া ফিঙ্ক বলেন, এই সংকটের প্রভাব শুধু পূর্ব ইউরোপেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এমনকি সামনের কয়েক দশকে এর প্রভাবের বিষয়ে আমরা ভবিষ্যদ্বাণীই করতে পারি না।

এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও গত সপ্তাহে বলেছেন, মস্কোর বিরুদ্ধে দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রকৃত অর্থে একটি যুগের সমাপ্তি, যা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পশ্চিমাদের বৈশ্বিক আধিপত্যের অবসান ঘটিয়েছে।

রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভও পুতিনের কণ্ঠে সুর মিলিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এককেন্দ্রিক বিশ্ব শেষ হয়ে গেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর