দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলোকে সামরিকীকরণ করার মাধ্যমে এ অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে চীন। এমন অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনিয়র কমান্ডার। তবে চীনের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েবিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল জন সি অ্যাকুইলিনোর অভিযোগের জবাব দিয়েছেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যাকুইলিনো বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গত দুই দশক ধরে চীন এ অঞ্চলে সবচেয়ে বড় সামরিক বাহিনী গঠন ও অস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছে, যা এ অঞ্চলের সামরিক ভারসাম্য নষ্ট করছে।
অ্যাকুইলিনো দাবি করেন, এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর উদ্দেশ্য ‘যুদ্ধ এড়ানো’, তবে পেন্টাগন চীনের বিরুদ্ধে লড়াই ও জেতার জন্য প্রস্তুত।
তিনি অভিযোগ করেন, চীন দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলোকে ব্যাপক মাত্রায় সামরিকীকরণ করছে এবং বিমানবিধ্বংসী ও নৌবিধ্বংসী অস্ত্র দিয়ে দ্বীপগুলোকে দুর্গে পরিণত করেছে। সম্ভাব্য যেকোনো সংঘাতের সময় চীন দ্বীপগুলোকে যুদ্ধবিমান ও বোমারু বিমান ওড়ানোর জন্য ব্যবহার করতে পারে।
অ্যাকুইলিনোর এমন বক্তব্যের জবাবে চীনের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েবিন বলেন, ‘একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র স্বাভাবিকভাবেই তার নিজের সীমানার মধ্যে প্রতিরক্ষামূলক স্থাপনা করবে এবং এটি আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
‘আমার যা বলা দরকার তা হলো যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ চীন সাগরের চারপাশে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে এবং প্রায়ই যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক বিমান পাঠাচ্ছে, যা উসকানিমূলক। এ ধরনের কর্মকাণ্ড এ অঞ্চলের উপকূলবর্তী দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’
বাঁয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নৌকমান্ডার জন-সি অ্যাকুইলিনো। ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ চীন সাগরে কমপক্ষে ৬টি দেশের মালিকানার দাবি রয়েছে। যদিও চীন দাবি করে থাকে দক্ষিণ চীন সাগরে তার ‘ঐতিহাসিক অধিকার’ রয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য মতে, প্রতি বছর প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক পারাপার হয় এই দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে।
সমুদ্রসীমা নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে চীনের বিরোধ রয়েছে। এমনকি মিত্র দেশ ফিলিপাইনের সঙ্গেও বিরোধ রয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে বরাবরই একচ্ছত্র আধিপত্য দাবি করে চীন। তবে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীরও অবস্থান রয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিয়েছে চীনের। বেশ কয়েকবারই চীনের বিমান তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। চীন দাবি করে থাকে, তাইওয়ান দেশটির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাইওয়ানের স্বাধীনতা ঘোষণার পরিণতির বিষয়ে বরাবরই সতর্ক করে দিয়ে আসছে চীন। তবে যুক্তরাষ্ট্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাইওয়ানে যেকোনো চীনা আগ্রাসনের সামরিক জবাব দেবে ওয়াশিংটন।