ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়াকে কোনো দায় না দিলেও অবিলম্বে যুদ্ধ থামা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
তিনি বলেছেন, ‘সংলাপ ও মধ্যস্ততা চালিয়ে যাওয়ার এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো বেসামরিকদের মৃত্যু ঠেকানো, মানবিক সংকট থামানো, লড়াইয়ে বিরতি দেয়া ও যত শিগগির সম্ভব যুদ্ধ বন্ধ করা।’
শুক্রবার চীনের রাষ্ট্রীয় সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। তবে দুই নেতার ফোনালাপে কী কথা হয়েছে এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র।
এদিন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে প্রায় দুই ঘণ্টা কথা বলেন শি।
তিনি বলেন, ‘সব পক্ষেরই উচিত রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংলাপে সমর্থন করা। ইউক্রেন সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোরও রাশিয়ার সঙ্গে আলাপে বসা উচিত। সেখানে কোনো সংকট দেখতে চাই না আমরা।’
ফোনালাপের পরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সবগুলো বড় রাষ্ট্রের উচিত শীতল যুদ্ধের মনোভাব ত্যাগ করে পরস্পরকে সম্মান করা। একই সঙ্গে গোষ্ঠীগত বিবাদ থেকেও দূরে থাকা দরকার।
এর আগে এক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের’ পক্ষে যেকোনো কর্মকাণ্ডের জন্য চীনকে দায় নিতে হবে বলে জানিয়ে দেবেন বাইডেন। একই সঙ্গে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে চীনকে যে মূল্য দিতে হবে, তা দেশটির প্রেসিডেন্টকে জানাবে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, রাশিয়াকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দেয়ার কথা ভাবছে চীন। তবে চীন এমন অভিযোগকে নাকচ করে দিয়েছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রাশিয়ার সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে। এরই মধ্যে কয়েক দফা ইউক্রেন-রাশিয়া বৈঠক হয়েছে। তবে কার্যত যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি এখনও।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিমাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসছে রাশিয়ার ওপর। একই সঙ্গে ইউক্রেনকে সহায়তা করার কথাও ঘোষণা দিয়েছে তারা। এসব দেশের কেউ অস্ত্র, কেউ অর্থ, কেউ খাবার বা অন্য দ্রব্য পাঠাচ্ছে।