ইউক্রেন ইস্যুতে পদত্যাগ করেছেন রাশিয়ায় সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম রাশিয়া টুডের এডিটর ইন চিফ মারিয়া বারনোভা। পুতিন সরকারকে ‘সর্বগ্রাসী’ অ্যাখা দিয়ে গত সপ্তাহে চাকরি ছাড়েন বারনোভা।
ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বারনোভা বলেন, ‘মনে হচ্ছে উত্তর কোরিয়াতে আছি কিংবা থার্মোনিউক্লিয়ার অস্ত্রের আঘাতে মারা পড়ব।’
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোর সমালোচক বারনোভা মস্কোতেই আছেন। জানিয়েছেন, রাশিয়া ছেড়ে যাওয়া সুযোগ নেই তার।
তিনি বলেন, ‘আমার একটা ছেলে আছে। ওকে নিয়ে দেশ ছেড়ে যেতে আমার স্বামী অনুমতি দেবে না। তাই মস্কোতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলো পরমাণু যুদ্ধ ডেকে আনছে জানিয়ে বারনোভা আরও বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করতাম না, চাকরিও হারাতাম না... যদি এটা নিশ্চিত হতাম যে আমরা আরও অনেক বছর বাঁচব। আমরা সত্যিই জানি না আমাদের ভাগ্যে কী আছে।
‘পুতিন প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবেন এ ভয়ের চেয়ে বেশি আতঙ্কিত পুতিনের কর্মকাণ্ডে তিনি নিজেই না টার্গেট হয়ে বসেন। মনে হচ্ছে পশ্চিমারা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে। পরিস্থিতি ভয়াবহ।’
দ্য নিউ ইয়র্কার বলছে, ক্যারিয়ারের শুরুতে চিকিৎসাসামগ্রী বিক্রি করতেন রসায়নের ছাত্রী বারনোভা। সন্তানের পড়াশোনার জন্য ওই পেশা ছেড়ে দেন।
২০১১-১৩ সালে চলা পুতিন সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সক্রিয় ছিলেন বারনোভা। সে সময় বেশ কয়েকটি হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি। বিক্ষোভকারীদের উসকে দেয়ার অভিযোগে খেটেছেন জেলও।
বিক্ষোভকারীদের উসকে দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন বারনোভা। ছবি: সংগৃহীত
কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল। সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পেয়ে রাজনৈতিক বন্দিদের পক্ষে কাজ করার লক্ষ্যে সাংবাদিকতায় আসেন বারনোভা।
টিভি রেইনের হয়ে ২০১৪ সালে ইউক্রেন বিক্ষোভের প্রতিবেদন করে পুতিন সরকারের নজরে আসেন তিনি। এর পর থেকে আরও কিছু সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি তার চ্যানেলের ওপর খবরদারি শুরু করে ক্রেমলিন।
২০১৯ সালে রাশিয়া টুডেতে যোগদানের পর ফক্সকে তিনি বলেছিলেন, ‘একজন এডিটর ইন চিফের দায়িত্ব পালনের চেয়ে আরটিতে বেশির ভাগ সময় গেছে সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত শিশুদের মায়েদের জন্য তহবিল সংগ্রহে।’