হামলাকারী রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধের ডাক দিয়ে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি।
প্রেসিডেন্ট ভবনের বিশেষ দূত ওলেকসেই আরেস্টোভিচ এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কির পক্ষে এই আহ্বান জানিয়েছেন।
সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত বলেন, ‘রুশ বাহিনীর সেনাবহর চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে গাছপালা কেটে সড়কে অবরোধ তৈরি করতে হবে। শক্রু সেনাদের পদাতিক বাহিনীর শেষ অথবা দুর্বল অংশ লক্ষ্য করে গেরিলা হামলা চালাতে হবে।’
এ সময় তিনি ইউক্রেনের ভূখণ্ডে নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের বীরত্বগাথা গেরিলা যুদ্ধের কথা স্মরণ করেন।
এই দূত আরও বলেন, ‘আমরা যদি রুশ পদাতিক বাহিনীর দুর্বল ও শেষভাগে সর্বাত্মক আঘাত হানতে পারি, তবে যুদ্ধ কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।’
যুদ্ধ বন্ধে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বৃহস্পতিবার আবারও বৈঠকে বসেছে ইউক্রেন ও রাশিয়া।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে এই বৈঠক শুরু হয়েছে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বৈঠক চলাকালীন সময়ই রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন সর্বাত্মক প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এর আগে, এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে চালানো সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত অন্তত ৯ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে।
অভিযানের সপ্তম দিনে ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘দখলদাররা ইউক্রেনীয়দের কাছ থেকে শুধু একটি জিনিস পাবে, তা হচ্ছে প্রতিরোধ। তীব্র প্রতিরোধ। এমন প্রতিরোধ যে তারা সারা জীবন মনে রাখবে। তারা মনে রাখবে দেশপ্রেমের যুদ্ধ কী।’
যুদ্ধরত দুই দেশ প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসে সোমবার। তবে ওইদিনের বৈঠকে যুদ্ধ বন্ধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।
অভিযানের সপ্তম দিন বুধবার রাশিয়া জানায়, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে তাদের ৪৯৮ সেনা নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন ১ হাজার ৬০০ জন। অন্যদিকে রুশ হামলায় ইউক্রেনের ২ হাজার ৮৭০ সেনা নিহত ও ৩ হাজার ৭০০ জনের বেশি আহত হন বলেও দাবি করেছে রাশিয়া।
রুশ বাহিনী দাবি করেছে, তাদের হাতে বন্দি ৫৭২ সেনা। অন্যদিকে রাশিয়ার দাবির বেশ আগেই পাঁচ হাজার রুশ সেনা নিহতের দাবি করেছিল ইউক্রেন।
যুদ্ধের সপ্তম দিনে ইউক্রেনের খেরসন শহর দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। অন্য শহরগুলো দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। প্রতিরোধ গড়ছে ইউক্রেনীয় সেনারা।