ইউক্রেন আগ্রাসনের জবাবে রাশিয়ার ব্যাংকিং সিস্টেমকে অকেজো করার পরিকল্পনায় নতুন নিষেধাজ্ঞার ছক আঁকছে হোয়াইট হাউস।
‘নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানাশোনা আছে’ এমন তিনটি বেনামী সূত্রের বরাতে ওয়াশিংটন কিছু রাশিয়ান ব্যক্তি ও সংস্থাকে তাদের বিদেশি সম্পদ জব্দ করা ও তাদের আন্তর্জাতিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ডলার ব্যবহার নিষিদ্ধ করে রাশিয়াকে চাপে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াশিংটন এমনটাই জানা গেছে রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার একটি প্রাথমিক প্যাকেজ প্রস্তুত করেছে, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগিয়ে বড় রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর লেনদেনে বাধা দেয়া। যদিও হোয়াইট হাউস এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার অর্থনীতিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য নেটওয়ার্ক থেকে বাদ দিয়ে আঘাত করার লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে, কারণ বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক লেনদেন ডলারে হয়। তবে রাশিয়ার ঠিক কোন কোন ব্যাংককে লক্ষ্যবস্তু করা হবে তা এখনও অজানা। বিশেষজ্ঞদের অভিমত এ ব্যাংকগুলো হতে পারে রাশিয়ার গাজপ্রমব্যাংক, এজবারব্যাংক ও ভিটিবি, পাশাপাশি ক্রেমলিনের সঙ্গে সম্পর্কিত রাশিয়ান টাইকুনরা।
ব্রাসেলস থেকেও এমন হুমকি দেয়া হয়েছে। এর আগে রোববার, জার্মান টিভি চ্যানেল এআরডির একটি সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লেইন জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে হামলা চালালে ‘আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বাজার’ থেকে রাশিয়াকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
এদিকে রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ অধ্যুষিত ইউক্রেনের দুটি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব ইউক্রেনে ‘শান্তি বজায় রাখতে’ সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার এ কর্মকাণ্ডে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘোষণাটি ‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিনা প্ররোচনায় লঙ্ঘন’ এবং এ ঘটনায় জাতিসংঘ ইউক্রেনের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের ডাককেও সমর্থন করেছে দেশটি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘শক্তিশালী ও কার্যকর’ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়া ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের মূল ভূখণ্ডে যুক্ত করে রাশিয়া। সে সময় থেকেই পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাত চলছে। ইউক্রেন সেনা ও মস্কো সমর্থিত বিদ্রোহীদের সংঘাতে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন আরও কয়েক লাখ।