ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া বিরোধ তুঙ্গে। একদিকে দেশটির নীতি-নির্ধারনী মহলে চলছে বাকযুদ্ধ অন্যদিকে সেনামোতায়েনের ঘটনা। এবার চলমান উত্তেজনায় নতুন উপাদান যুক্ত করলো রাশিয়া। দুই দেশের বাক-যুদ্ধের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে মস্কো।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহিষ্কৃত কূটনীতিক বার্ট গোরম্যান যুক্তরাষ্ট্রের মস্কো দূতাবাসের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তিনি দূতাবাসের ডেপুটি চিফ। তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে মস্কো ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই বহিষ্কারের আদেশের কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি মস্কো। যদিও দূতাবাসের কাজ চালিয়ে নেয়ার মতো ভিসা গোরম্যানের ছিল।
তবে রাশিয়ার এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ কী হতে পারে তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে প্রত্যাহারের কথা বললেও ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা সরাচ্ছে না রাশিয়া। সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করে রেখেছে দেশটি। পাশের মিত্র দেশ বেলারুশের সঙ্গে চালাচ্ছে সামরিক মহড়া। কৃষ্ণসাগরে যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন নিয়ে মহড়া চালাচ্ছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর আশঙ্কা যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে দেশটি। যদিও বরাবরই এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে মস্কো।
তবে ইউক্রেনের সঙ্গে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে রুশ ভাষাভাষী ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষই সংঘাতের জন্য একে অপরকে দোষারোপ করছে। তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, বিদ্রোহীদের ওপর হামলায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন রাশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেনের দাবি, রাশিয়া আক্রমণের অজুহাত খুঁজছে। যদিও অজুহাত কী হতে পারে তা স্পষ্ট নয়।
তিনি বলেন, রাশিয়া যা দেখাতে পারে তা হলো দেশটিতে বানোয়াট ও তথাকথিত সন্ত্রাসী বোমা হামলা, ইউক্রেনীয় রুশদের গণকবরের সন্ধান, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ড্রোন হামলা, এমনকি ইউক্রেন রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে আক্রমণ।’
যদিও যুক্তরাষ্ট্র তার দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।
ইউক্রেন ইস্যুতে সম্প্রতি দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার উত্তেজনা বাড়ছে। ন্যাটো যেমন পূর্ব ইউরোপে সেনাসংখ্যা বাড়াচ্ছে, রাশিয়াও তেমনি ইউক্রেন সীমান্তে সেনাসংখ্যা বাড়িয়েই চলছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপত্যকা দখলে নেয় রাশিয়া। শুরু হয় ইউক্রেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে মস্কো মদদপুষ্ট ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে কমপক্ষে ১৪ হাজার মানুষ নিহত হন। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান অন্তত ২০ লাখ নাগরিক।